পাতা:মীর মশাররফ হোসেন রচনাসংগ্রহ প্রথম খণ্ড.djvu/২৩৫

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

૨ર૭ মীর মশাররফ হোসেন রচনাসংগ্ৰহ পথে সাহেবের গুপ্ত লাঠিয়াল নিয়োজিত হইয়াছে। যে বেশেই হউক, যেভাবেই হউক তাহার গম্যপথে বাধা দিবেই দিবে। টাকাও কড়িয়া লইবে । ভৈরববাবু বলিলেন—আমিও সে বিষয় না ভাবিতেছি তাহা নহে। ঈশ্বর বৃক্ষা করিলে কিছুতেই মার নাই । সেই একমাত্র বল ভরসা । যাহা হউক আগামী পরশু দিবস নিশ্চয় টাকা রওয়ানা কবিব ! ঈশ্বর বৃক্ষ না করিলে আর উপায় কি ? আমাদের যেরূপ সংসার, আয় হইতে ব্যয়ের ভাগই অধিক । খাজানাগুলি মারা গেলে বিষয় রক্ষা কবিবার আর কোন উপায়ই দেখিতেছি না । লাটের খাজনা যদি সাহেবের হস্তগত হয় তবে বিপদের একশেষ দেখিতেছি। কোথা হইতে আবার টাকা সংগ্ৰহ করিব। কাজেই একেবারে সৰ্ব্বস্বাস্ত হইতে হইবে । সৰ্ব্বস্ব যাইবে । ঈশ্বব আছেন ! ভৈরববাবু এই সকল কথা বলিতেছেন, এমন সময় দুইজন বাহক বড় বড় দুইটি বাক-পূর্ণ, নূতন হাডি মাথায় করিয়া বৈঠকখানার মধ্যে উপস্থিত, ভৈরবৰাবু তাহাদিগকে দেখিয়াই—উঠিলেন, এবং কার্য্যকাবক মহাশয়কে বলিলেন ৰাত্রও অধিক হইয়াছে। খাজান পাঠানোর সমুদায় বন্দোবস্ত কাল কবির। আপনি বিশ-পচিশজন ভাল ভাল লোকের জোগাড় কবিয়া রাখিবেন । এই কথা ৰলিয়াই বাবু বাহকদ্বয়কে সঙ্গে করিয়া বৈঠকখানা হইতে চলিয়া গেলেন। ষড়বিংশ তরঙ্গ খাজান Tর চTলান রাত্র প্রভাত হইবার বেশি বিলম্ব নাই । চোকগেল পাখি জগতের পাপতাপ সহিতে না পারিয়া ‘চোক গেল চোক গেল” করিয়া রব করিতেছে। কেনীব গোয়েন্দা ছদ্মবেশে তখনও ঘুরিয়া ঘুরিয়া সন্ধান লইতেছে। গোয়েন্দা একজন ফকির একজন বৈরাগী যেখানে যাহার সহিত কেনিব শক্রতা-বিবাদ সেইখানেই গোয়েন্দা, সেইখানেই গুপ্ত-সন্ধানী । সেইখানেই তাহদের গমন । ফকিরকেও লোকে ভক্তি করে, বৈরাগীকেও শ্রদ্ধা করে, ভিক্ষণও দেয় । ফকির, বৈষ্ণবের প্রতি কাহারও কোনপ্রকারের সন্দেহ হইতে পারে না । বিশেষ গ্রাম্য-জমিদার— তায় আবার বহুকালের কথা । সেকাল আর একাল অনেক প্রভেদ । দেউড়িতে নেগাহবান থাকিলেও প্রবেশ-প্রস্থানে তত মনযোগ নাই। বেশি কড়াকড়ি,