পাতা:মীর মশাররফ হোসেন রচনাসংগ্রহ প্রথম খণ্ড.djvu/২৪৩

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

వ\98 মীর মশাররফ হোসেন রচনাসংগ্ৰহ বাবুর সর্বনাশ হইল লাটের খাজনা লুট । আর সর্বনাশের বাকি কি ? হঠাৎ এত টাকা এই কদিনের মধ্যে কোথা হইতে জোটাইয়| বিষয় বৃক্ষা করিবেন! লাটের দিন কি ভয়ানক দিন । বাজকর আদায়ের কড়া এমনি নিয়ম, যে স্বর্যঅস্ত হইলেই দফা রফা, কার্য্য শেষ। জমিদারী নিলাম—নিলাম তো সত্য-সত্যই নিলাম। আর দেয কে. আর পায় কে ? কিস্তিমত টীকা দাখিল না হইলে কিছুতেই আর রক্ষা নাই –হাজাব হউক বেলাতী বুদ্ধি, সে বুদ্ধির কাছে বাঙ্গালী বুদ্ধি কোনই কাজের নহে । ধন্য কেনী । কি কৌশলে কি সন্ধানে টাকাগুলি হস্তগত কবিল। এমন কৌশলে ধন্য! ধন্য তোমার সাহস । কেনী শোক, তাপ, বিবহ, বিচ্ছেদ নানা প্রকাব মনকষ্ট ভোগ করিয়া শেষকালে বাঙ্গালীর উপব চটিয়া গিযাছেন । হাডে হাডে চটিয়াছেন । বাঙ্গালীব নামেই জলিয় ওঠেন । চক্ষের শূল মনে কবেন । লাঠিয়ালদিগকে ভাল না বাসিয়া পারেন ন! বলিয়া মুখে ভালবাসা জানান । কার্য্যেও দেখান যে, তোমরাই আমাব সকল । বাঙ্গালীর কথায-কার্য্যে আর র্তাহাব বিশ্বাস নাই । বিশ্বাসতরুর মূলে তাহাবই ভালবাস জর্কি—বিষবরি সিঞ্চন করিয়া বিষময় ফল ফলাইয়া গিয়াছে। তাহাতেই এত চটা। কেনীব অদৃষ্ট-চক্রের গতি ক্রমেই উধেবর্ণ। যে কার্য্যে হাত দিতেছেন তাহতেই প্রতুল হইতেছে। নীল, বেশমে বিস্তর আয হইতেছে । জমিদারীতেও বেশ লাভ দাড়াইয। গিয়াছে। দিন দিন উন্নতি— দিন দিন মজুদ টাকার সংখ্যা বৃদ্ধি। চারিদিক হইতে টাকা আসিতে থাকে তখন চারদিক কেন, দশদিক হইতে বিশপ্রকাবে টাকা আসিতে থাকে। সন্ধ্যা নিকট । কেনী ফুলবাগানে মেমসাহেবের সঙ্গে বাগানের শোভা, কালীগঙ্গার শোভা, সাযৎকালীন সেই প্রকৃতির শোভা দেখিয়া মনপ্রাণ শীতল করিতেছেন আর উভয়ে-হাত ধরাধবি করিয়া পরচক্ষে প্রণয়ভাব গাঢ়রূপে দেখাইয়া মৃদুমন্দভাবে মনের আনন্দে পা-চারি করিয়া বেড়াইতেছেন । এমন সময় ফকির গোয়েন্দা হাপাইতে হাপাইতে আসিয়া সেলাম বাজাইয়া বলিল— “হুজুর । বকশিশ চাই ।” সাহেব বলিলেল—“বকশিশ পরে দিব, খবর কি ?” “হুজুর । বকশিশের হুকুম হউক, কাজ ফতে হইয়াছে। বাবুর ভুল ভাঙ্গিয়াছি । বাঙ্গালা-রাজ্যে এমন কোন লোক নাই যে, হুজুরকে ঠকায় । মামলা,