পাতা:মীর মশাররফ হোসেন রচনাসংগ্রহ প্রথম খণ্ড.djvu/২৫০

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

উদাসীন পথিকের মনের কথা ૨ 9 ૭ মীরসাহেব লাহিনীপাড। গ্রামের ঘাট ছাড়িয়া সাওতার ঘাটের নিকটবর্তী হইয়া দেখিলেন যে, বহু-সংখ্যক লোক ঘাটে দণ্ডায়মান। মনে মনে ভাবিলেগ যাহা শুনিয়াছি তাহা যদি মিথ্যা হয় তবে নিশ্চয়ই সা গোলাম লোকজন সহকারে আমার অভ্যর্থনার জন্য ঘাটে দাড়াইয়া আছে । নৌকা বত নিকটে আসিতে লাগিল মীরসাহেব ততই আশ্চর্য্যাম্বিত হইতে লাগিলেন। দেখিলেন স৷ গোলাম আছে, দেবীপ্রসাদ আছে, আরও অনেক লোক আছে। কিন্তু দৃশু ভিন্ন, এ দণ্ডায়মানেব অর্থ ভিন্ন—ভাব ভিন্ন । লাঠি, সড়কি, ঢাল, তরবার, বাধাকোমর, রুদ্রভাব— রোষের লক্ষণ। সকলেই দণ্ডায়মান। ডাঙ্গার নিকটে নৌকা ভিড়িতেই উচ্চস্ববে একজন বলিয়া উঠিল “যদি প্রাণ বঁাচাইতে চাও, যদি মান রাখিতে চাও তবে এঘাটে নৌকা-ভিডাইও না । ভাসিয়া আসিতেছ, ভাসিয়াই চলিয়া যাও । এ-ঘাটে কোন প্রয়োজন নাই । নৌকা লাগাইবার কোন অধিকার নাই ।” স্রোতস্বতী গৌবীরস্রোতে নৌকা টানিয়া ধরিয়া নৌকার বেগবক্ষা করিতে বা ফিরাইতে কাহারও সাধ্য নাই । মুখের কথায় কেমন করিয়া কুল না ধরিয়ে কি প্রকারে অন্যদিকে যাইবে অথবা ফিরাইবে ? স্রোত ছাড়াইয়া মন্দস্রোতে নৌকা পড়িতেই দাডিবা দাড় ছাডিয়া লগ ধবিল। তখন দেবীপ্রসাদ পুনবায় বলিতে লাগিল—“এই নে নৌকা ভিড়াইতে পারিবেন না, কেম অপ্রস্তুত হইতেছেন।” পাঠক ! যে জামাই শতহস্ত ব্যবধান থাকিতে সেলামেব উপর সেলাম বাজাইয শ্বশুরের নিকট ভক্তি প্রকাশ করিত, স্নেহ-আকর্ষণের আকর্ষণী ফেলিয়া শ্বশুরের মনকে শতহস্ত দূর হইতে টানিয়া লইত, আজ সেই জামাই স্বয়ং তরবারি হস্তে বুক ফুলাইয়া চক্ষু উল্টাইয়া সজোরে দণ্ডায়মান। চাকরের হস্তে বলুক। সেলাম আলায়কুমের নামও মুখে নাই। ইহার পর দেবীপ্রসাদের ঐ কথা। জামাইবাবু এখন পর্য্যন্ত কিন্তু নীরব। আজ কে কাহার অভ্যর্থনা করে। আজ কে মীরসাহেবকে মান্য করে ? সর্দাব, লাঠিয়াল, এবং অন্য অন্য আরও অনেক হাত সেখানে ছিল, কিন্তু মীরসাহেবকে সেলাম বাজাইতে আজ কোন হাতই উপরে উঠিল না। *. মীরসাহেব বুঝিলেন যে গুড়ে বলি পড়িয়াছে। দুধে গো-চনা মিশিয়াছে। দেবীপ্রসাদকে জিজ্ঞাসা করিলেন, “নৌকা ভিড়াইবে না কেন ?" * -

  • 1. da +. * הר

S