পাতা:মীর মশাররফ হোসেন রচনাসংগ্রহ প্রথম খণ্ড.djvu/২৫৪

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

উদাসীন পথিকের মনের কথা ૨8g অন্যরূপ চিত্র দেখুন। আফ্রিকাখ েগু নীলনঙ্গ-তীরে সুবিখ্যাত মিশর নগরের রাজমন্ত্রী আজিজ মেসেরের স্ত্রী, যাহার গুণের বর্ণনা পারসিক মহাকবি জামীমহোদয় সহস্ৰমুখে বর্ণনা করিয়াছেন। নাম “জুলেখা”। তিনিও ধর্মের মাথায় কুঠার মারিয়া পবিত্র-প্রণয়-বন্ধন ছিন্ন করিয়া, মহামতি ইউসুফের প্রেমে মজিয়া, —রূপে মোহিত হইয়া, বৰ্মণীকুলে কলঙ্করেখা পাতিয়া গিয়াছেন। ইউসুফের মন ভুলাইতে, কত যত্ন, কত চেষ্টা, শেষে “হফতম খানা” ( সপ্ততল বাসর ) নিৰ্ম্মাণ করিয়া নিজ-যুক্তিসহ মানসাঙ্কিত নগরে প্রেম-ভাবপূর্ণ, কুরুচি-সম্পন্ন, নানাবিধ চিত্র, বিখ্যাত চিত্রকর দ্বারা চিত্রিত করিযী ইউসুফের মন ভুলাইতে, প্রিয়দর্শনের হস্ত ধরিয়া চিত্রগুলি দেখাইয়াছিলেন। মহাঋদিব মন ভুলইয়া কুপথে আনিতে কত প্রকার যত্ব করিয়াছিলেন । যাহার বক্ষক ঈশ্বর, তাহীর মতিগতি কিবাইতে সাধ্য কাব? সে চিত্রে সে মন ভুলিল না। জুলেখা মিথ্যাভান করিয়া হৃদয়ের রত্ন— মহাবত্ব ইউসুফকে অযথা অপরাধী করিয়া বন্দিখানায় পাঠাইতেও ক্রটি করেন নাই । সুতরাং পথিক তাহা হইতে চক্ষু ফিবাইল । ভাবতরমণী “নুরজাহান" শেষে রাজবাণী । প্রথমে শের আফগানের মনমোহিনী ছিলেন । আশ্চর্য্য পতিভক্তি । অনায়াসে স্বামীঘাতককে পতিত্বে বরণ করিলেন । বাজবাণী হইয়া অবও যশস্বিনী হইলেন । অকাতবে পতিঘাতককের ক্রোড়ে শয়ন করিয়া প্রেম বিতরণ করিলেন । ইহাতেও কি বলিব নুরজাহান রমণীরত্ব ? রাজদৌরাত্মা-ভয় অবশ্ব ছিল. স্বীকার করি, কিন্তু স্বামীর উদ্দেশ্যে প্রাণ বিসর্জন করিতে কি সে-সময় কোন উপায় ছিল না ? যাহার ইচ্ছা হয়, তিনি সৈনিক—সীমস্তিনীর রূপগুণের প্রশংসা সহস্ৰমুখে করুন কিন্তু উদাসীন পথিক যাহা ভাবিবার ভাবিয়া চক্ষু অন্যদিকে ফিরাইল । তৃতীয় চিত্ৰ –কবিবর বঙ্কিম যে-চক্ষে আয়েষার রূপ বর্ণনা করিয়াছেন, যে “পজিসনে" তিলোত্তমার “ফটো” তুলিয়াছেন । যে তুলিতে কুন্দ-নন্দিনীর শরীর ভাকিয়াছেন । এবং গুণাকর যে রুচি ও প্রবৃত্তিতে কু-স্বভাব-সম্পন্ন—মালিনীর মুখে বিদ্যার রূপ বণনা করিয়াছেন, পথিক সে চক্ষু, সে পজিসনে, সে তুলি, সে প্রবৃত্তিতে দৌলতননেসারের রূপগুণ বর্ণনা করিতে অক্ষম। কাজেই শেষকথা দৌলতননেস পবিত্র, মহাপবিত্র, দয়াবতী, পুণ্যবতী, এবং আজীবন চিরসতী । সে পবিত্রপদই পথিকের মুক্তিপদ, পূজনীয় পদ স্বর্গ হইতেও গরিয়সী। ইহা