পাতা:মীর মশাররফ হোসেন রচনাসংগ্রহ প্রথম খণ্ড.djvu/২৫৫

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

S8や মীর মশাররফ হোসেন রচনাসংগ্ৰহ অপেক্ষা পথিক আর কি বর্ণনা করিবে । তুলনা করিয়াই বা আর কি দেখাইবে ? কাজেই নীরব । কাজেই সেকালের কথা, একালের কথা আপাততঃ এইখানেই শেষ । মনযোগ করিযা এখন মনের কথা শুন্ঠন ৷ মীরসাহেব পৈতৃক-বসতবাড়ি, বিষয-সম্পত্তি হইতে জামাইয়ের চক্রে অদৃষ্টের লিখায় বঞ্চিত হইয়াছে। পথের ভিখাবী হইয়াছেন । এই সকল ভাবিয়া দৌলতননেসা তাহাকে বিশেষ যত্ন ও আদরেব সহিত সযত্নে বাথিয়াছেন । পিতাব সঞ্চিত সমুদায় অর্থ স্বামী হস্তে অর্পণ করিয়া স্বামী পদসেবায় সৰ্ব্বদা-বত রহিয়াছেন । কোন কারণে র্ত্যহাব মনে কোনরূপ কষ্টের কাবণ না হয় তদপ্রতি বিশেস দৃষ্টি রাখিয়াছেন। দৌলতননেসাবের পিতা বঙ্গপুর জেলায় মীরযুন্সীব কার্য্য করিতেন। কথায় কথায় টাকা আসিত। তাহার বংশের প্রদীপ, উজ্জল-পত্ন, মহামুলা-মণি যাহা বল, সকলই ঐ একমাত্র কন্যা । সুতরাং কন্যার আদরে জামাই সৰ্ব্বেসৰ্ব্ব৷ হইয়া উঠিলেন। বিবাহের তিন বৎসব পব মুন্সী জিনাতুল্য পবলোক গমন করিলে সংসাবের সমুদায় ভাব মীরসাহেবের শিরেই পড়িল ৷ ভাগী নাই, অংশী নাই, অন্য দাবী নাই, কোন বিষযে অভাব নাই । পাঠক ! দয়ামস জগদীশ মীবসাহেবকে বাহ্যিকসুখে একপ্রকাব সে-সময় ভালই রাখিয়াছিলেন । সৰ্ব্বদা হাসিখুসী, বৃঙ্গ-তামাসাতেই । সংসাবযাত্রা নির্বাহ কবিতে লাগিলেন । বসিরুদ্দীন আবার আসিয়া জুটিয়াছে। গান, বাজনা, বগড, আমোদ, বেদম চলিতে লাগিল । দৌলতননেসা নিজগুহে শলন করিয়া আছেন । বাত্রি দ্বিপ্রহব অতীত হইয়া যাইতেছে । মীবসাহেব আমোদ-আহলাদেই আছেন । দৌলতলনেসাবেব কর্ণে গানের স্বর আসিতেছে, বাজনাব শব্দ যাইতেছে । বামাকণ্ঠেব মধুবধ্বনিও সময় সময় প্রবেশ করিতেছে। নূপুবেব ঝনঝনীও কানে লাগিতেছে—বাজিতেছে। ষত রাত্রিই হউক স্বামীব সহিত দেখা হইলে, সেই বিশুদ্ধভাব, সেই বিশুদ্ধ-প্রেমভাব, সেই হাসিমুখে সেই মধুমাখা হাসি-কথা । পাড়া-প্রতিবেশীরা সময় সময় অনেক অনেক কথা বলিত। তোমাবর্ত বাডি, তোমারই ঘর, তোমাবই বিষয়, তোমারই সকল । তুমি একঘরের একটি মেয়ে, তোমার আদরের সীমা নাই । আর তোমার স্বামী সৰ্ব্বদা রঙ্গ-রসে আমোদে মত্ত । আমোদ চুলোয় যাক, মাঝে যে আবার কি ঘটনা। মীরসাহেবের এ-নিতান্তই