পাতা:মীর মশাররফ হোসেন রচনাসংগ্রহ প্রথম খণ্ড.djvu/২৫৮

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

উদাসীন পথিকের মনের কথা ૨ 9 જ মারা গেলাম। আমরা একেবাবে সাবা হইলাম। আপনি রাজা, অমিবা প্রজ, আমাদিগকে রক্ষা করুন। আমবা ধনে প্রাণে সারা হইয়াছি । আমাদিগকে রক্ষা করিয়া যান। দোহাই ধৰ্ম্মাবতাব । আমবা ধনেপ্রাণে একেবারে সাবা হইয়াছি । আমাদেব দুঃখের কথা শুনিম যান। যমের হীত হইতে আমাদিগকে উদ্ধার করিযা যান। “শু্যামচাদ” আঘাতে পুষ্ঠে দাগ বসিযাছে একবার পবিত্ৰচক্ষে সেই দাগগুলি দেখিয়া যান। আপনি দেশের বাজা ! আমাদের পেটের দিকে মুখের দিকে একবাব চাহিয়া যান। দোহাই ধৰ্ম্মাবতাব ! আমাদেব দুরবস্তাব প্রতি একট, দৃষ্টি কবিয়া যান । সে কান্না কে শোনে ? কাহাব কণেই বা যাইবে ? ইঞ্জিনের স্বাভাবিক বিকট-শব্দে প্রজাব আৰ্ত্তনাদ লাটমহামতিব কর্ণে উঠিবে কেন ? বোধহয় তাহার। ভাবিয়ছিলেন, গ্রাম্যলোক স্টিমাব কখনও দেখে নাই, তাহাই ছুটাছুটি করিয়া শোরগোল কবিয়া আমোদেব সহিত দেখিতেছে । আহনাদে দৌডিতেছে। ক্রমেই জনসংখ্যা বৃদ্ধি, ক্রমেই কান্নার-বোল দ্বিগুণ বৃদ্ধি। স্টিমার উজানমুখে যাইতেছে । স্রোতবেগ অতিক্রম করিয়া যাইতে সম্ভবতঃ একটু ধীৰে চলিয়াছে। কালীগঙ্গাও বেশী প্রশস্ত নহে। একপারের কথা অপরপাবের লোকে বিনামনযোগে বুঝিতে পারে। স্টিমারের সেই কর্ণভেদী ধব-ধব-ঘস-ঘস শব্দ পরাজয় কবিয সে হৃদয়বিদাবক অৰ্ত্তিনাদ গ্রান্টমহামতিব কর্ণে প্রবেশ কবিল। তিনি চৈতন্য হইলেন । যেমনই মনযোগ, অমনি হৃদয়ে আঘাত । উভয়কুলের বহুসংখ্যক প্রজাব আৰ্ত্তনাদে আজ বঙ্গেশ্বরের মন গলিযা গেল। মনে মনে মনস্থ কবিলেন সে জেলায় যাইয়া ইহাব ব্যবস্থা করিবেন । প্রজাব দুরবস্থা নিবারণ জন্য বিশেষ যত্নবান হইবেন। মহামতির মনেরভাব প্রজার জানিবার ক্ষমতা হইল না। আশ্বাসমূলক একটি কথা শুনিতেও তাহদের ভাগ্য হইল না। তাহারা ভাবিয়ছিল যে আমাদের এই কান্নায় লাটসাহেব স্টিমার থামাইতে আদেশ করিবেন, আমরা মনের দ্বাব খুলিয়া দেখাইব । দুরবস্থার কাহিনী আজ মনের সাধে শুনাইব । তাহ হইল না। স্টিমার থামিল না। কি ভীষণ দৃশু ! “নীলকরের দৌরাত্ম্য আগুনে আর কতকাল জলিব। রাজগোচরে গঙ্গায় বাপ দিয়া প্রাণ বিসর্জন কবিৰ সেও স্বীকার । তত্ৰাচ নীল আর বুনিব লা।” এই কথা স্থির করিয়াই সহস্রাধিক প্রজা নদীকূল হইতে জলে ঝাপ দিয়া ডুৰিতে ডুবিতে টিমাব দিকে আসিতে লাগিল। প্রাণের মায়া নাই, জীবনের আশা নাই,