পাতা:মীর মশাররফ হোসেন রচনাসংগ্রহ প্রথম খণ্ড.djvu/২৫৯

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

* Q o মীর মশাররফ হোসেন রচনাসংগ্ৰহ কোনরূপ সুখের ইচ্ছা ও আর নাই। কেনীর দৌরাত্ম্যে মরিতেই হইবে। আর কেন? রাজ-সম্মুখেই ডুবিয়া মরিব । এই কথা মনে করিয়াই সহস্ৰাধিক প্রজ জলে ঝাপ দিয়া পড়িল, নদীস্রোতে অঙ্গ ভাসাইল। মহামতি লাটবাহাদুর মহাব্যতিব্যস্ত হইলেন। ষ্টিমার থামাইতে আজ্ঞা করিলেন এবং ষ্টিমারস্থ সমুদায় জালিবোট জলে নাম।ইয়। প্রজাদিগকে উঠাইতে আদেশ কবিলেন । যাহাবা সন্তরণ দিয়া ষ্টিমার ধরিল, ষ্টিমাবের উপর উঠিয়া কান্দিয়া কান্দিয়া দুরবস্থার বিষয় বলিতে লাগিল। ক্রমে সমুদাম প্রজা ষ্টিমারের চতুঃস্পার্শ্বে, কেহ জলে, কেহ জালিবোটে, কেহ ডাঙ্গায় থাকিয়া আপন আপন দুঃখের কান্না কান্দিতে লাগিল । প্রজাব দুরবস্তার কথা শুনিয। লাটবাহাদুর অত্যন্ত দুঃখিত ইহলেন । র্তাহাব হৃদয় গলিয়া গেল। দশ-বাব জন প্রজাকে ষ্টিমারে লইয়া অপর অপর সকলকে আশ্বাস বাক্যে বুঝাইয়া বলিলেন—“তোমাদেব যাহার যে নালিশ থাকে, আগামী পবশু শনিবাব পাবনায় গিয়া আমাকে জানাই ও । আমি তোমাদের বিচার অবশ্যই করিব । তোমরা কুঠিযালকে ভয কপি ও না । এ-দেশে তাহাবাও যেমন প্রজা, তোমরা ও সেইরূপ প্রজা !” এই বলিয়া ষ্টিমাব ছাডিসা দিলেন । অল্পক্ষণ-মধ্যেই সোনামুখী গৌবীর অগাধ জলে আসিয়া গডিল। দেখিতে দেখিলে গৌবী পাব হইয়া পদ্মাব স্রোতে ভাসিয়া ভাসিসা পাবন অভিমুখে চলিল । ত্রয়ত্রিংশ তবঙ্গ সূত্রপাত নীল—বিদ্রোহের সূত্রপাত । বাঙ্গালায় নীলকরের অধঃপতনের সূত্রপাত । প্রজার আনন্দের সীমা নাই । সকালে সকালে স্নান-আহার কবিয়া-ঘরে যাহা ছিল সিদ্ধপোড়া, ভাতেভাত যাহা জুটিল আহাব করিয়া গ্রামেব মাথালপ্রজা ছাতিলাঠি, গামছা লইয়া লাটদরবারে যাত্রা কবিল। নীলকবেব দৌরাত্মা আগুনে যাহার পুড়িয়া ছারখারে যাইতেছিল, তাহাবাই জিলায় চলিল । এদিকে কেনী পথে পথে লাঠিযাল সর্দার, দেশওয়ালী, দেবে, চোবে, পাড়ে, সিং মোতাইন কবিয়া বাখিযাছেন । র্তাহার এলাকার ষে প্রজা পাবনায় যাইবে তাহার পিঠের চামড়া থাকিবার তো কথাই নাই । তাহার পর অন্ত ব্যবস্থা । ফিরে গিয়ে ৰাস্তুভিটার মাটি অীর চোখে দেখিতে হইবে না। স্ত্রী-পরিবারের ভাগ্যে যাহা থাকে তাহাই হইবে। ¥