পাতা:মীর মশাররফ হোসেন রচনাসংগ্রহ প্রথম খণ্ড.djvu/২৬৩

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

ર (t 8 মীর মশাররফ হোসেন রচনাসংগ্ৰহ: ছুটিল কি ? পালাহল । কাহাকে বাধ্য হইয়া ঘোড়াটি ছাড়িয়া যাইতে হইল। কেহ কেহ পবিধেয বসন ফেলিয়া বাধ্য হইয়া দিগম্বরবেশে মাঠে মাঠে দৌড়িয়া পালাইল । ঢাল, তরবার, লাঠি, ঠেঙ্গা কালীগঙ্গার স্রোতে যাহা ভাসিবার ভাসিয়া চলিল, যাহা ডুবিবাব ঐখানেই ডুবিয়া পড়িল । জলে ফেলিল কে ? অমোঘঅন্ত্র সকল আজ জলে বিসর্জন করিল কে ? সকলি সেই দয়াময়ের মহিমা । কুঠির লোক প্রাণ লইয়া পার । কেমাব অস্ত্র প্রজ হস্তে আজ প্রথম জলে ভাসিল, এই প্রথম জলে ডুবিল। যাহার। দববারে যাইতে একটু বাধা পাইয়াছিল, তাহারা বাধাবিঘ্ন অতিক্রম করিযী মনের আনন্দে সম্পূণ উৎসাহে জিলায় লাটদরবারে চলিল । পূৰ্ব্বে যাহাদের যাইবার কোন কথাই ছিল না, উপস্থিত ঘটনায় তাহাবাও অনেকে তাহাদেব সঙ্গি হইল। কি জানি আবার কোন দুস্মন কোন পথে কি ঘটনা ঘটায় । হিন্দু-মুসলমান একত্রে আপন আপন ইষ্ট দেবতার নাম করিয়া সাব বধিয়া পথে বাহিব হইল । কালীগঙ্গায় গৌরীগর্ভে নৌকায় পদ্মার ঘাটে এবং চলতি বাস্তায, পদব্ৰজে কত লোক যাইতে লাগিল, তাহার সংখ্যা করা কঠিন । সকলের মুখেই আনন্দের আভা । সকলেই যেন কি একটা মহৎকার্য্যে কৃতকাৰ্য্য হইবে অশিয়েই মহাখুশী । সঙ্গে সঙ্গে ব্যস্ত। সকলেই যেন জেল হইতে খলাস পাইয়াছে। অবিচাবে অত্যাচারে এতদিন জেলখানায় পচিতেছিল। দৈববলে বলীয়ান হইয়া জেল ভাঙ্গিয়া যেন কোন যথার্থ আশ্রয়দাতার পদাপ্রয় লইতে বেগে ছুটিয়াছে ! পদ্ম-গৌবী-সংযোগস্থল বডই ভয়ানক। পদ্মা পাড়ি না দিলে জিলায় যাইবার উপায নাই ! নৌকাতে পদ্মাপার হইতে হয় । সুখ-পথে বান্দারাস্তা বহিয়া গেলেও কাচাদিয়াডেব ঘাটে পাটনীর নৌকায় খেয়াপার হইতে হয় । পাঠক । চলুন আমবাও পদ্মাপাবে যাই । চতুত্রিংশ তরঙ্গ দরবTর আজ শনিবার। বঙ্গেশ্বর প্রকাশু দরবারে প্রজার দুরবস্থা শুনিবেন । প্রার্থনাপত্র গ্রহণ করিবেন। এই ঘোষণা । জিলাময় লোক। মাঠে, ঘাটে, রাস্তায়, ইছামতী:নদীর পূর্ব-পশ্চিম, উভয়তীরে, দালানে, কোঠায়, ঘরে, বোটে, বজরায়, নানাবিধ স্থানে লোক আর ধরে না। লাট দেখিতে, দরবার দেখিতে, মনের বেদন জানাইতে নীলকরের দৌরাত্ম্য বিষয় বঙ্গেশ্বরের গোচর করিতে