পাতা:মীর মশাররফ হোসেন রচনাসংগ্রহ প্রথম খণ্ড.djvu/২৬৪

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

উদাসীন পথিকেব মনের কথা ર (t (t হিলু, মুসলমান, ক্লষকশ্রেণী, মধ্যশ্রেণী, তালুকদার ক্ষুদ্র-ক্ষুদ্র জমিদার, মহাজন, ব্যবসায়ী নানা শ্রেণীর লোক উপস্থিত। নীলকর পক্ষীয়, নীলকর সংশ্ৰবী, হিতৈষী, ভালবাসার লোকও যে ঐ সকল দলের মধ্যে কেহ কেহ না আছে এরূপও নহে। তাহার নানাবেশে, নানাভাবে দলমধ্যে গোপনে, প্রকাশে বেড়াইতেছে—সন্ধান লইতেছে। উপস্থিত লোকসমূদ্র মধ্যে কুঠিয়াল-পক্ষীয় লোক বিলু-সদৃশ। হঠাৎ কাহারও নজরে পড়িতেছে, আবার কোথায় মিলাইয়া যাইতেছে, তাহার আর সন্ধানই পাওয়া যাইতেছে না। কিন্তু এত লোকের মধ্যে সে দুষ্মন চেহারা যেন মার্কামারা । মুখের দিক নজব পড়িতেই যেন মুখভাবেই স-প্রমাণ করিয়া দিতেছে যে, আমরাই কুঠিয়াল-পক্ষীয। আমরাই নীলকবেব গুপ্তচর ও সন্ধানী। বড় বড় জমিদার বড় বড় বজরায়, বড় বড় নিশান উড়াইয়া, ঘাট-অঘাট আলো করিয়া ইছামতীব বক্ষে ভাসিতেছেন । বায়ু প্রতিঘাতে জল নাচিতেছে। বোট-বজরাও নাচিতেছে। অনেকেই নানাদোলায় তুলিতেছেন । কে কোন পক্ষে থাকিবেন, প্রজাব হইয়া দুইটি কথা বলিবেন কি নীলকবের পক্ষ সমর্থন কবিবেন । লাটসাহেব আজ আছেন কালই চলিয়া যাইবেন, শেষে—ধরিবে কে ? কুঠিব নায়েব, পেস্কার দেওয়ানজীবাবুকে কত ডালা, কত ফলফুল, কত চব্য-চৰ্য-লেহ-পেয় দিয়া একটু অনুগ্রহ পাইয়াছেন। লোকে বলে ভালবাসা হইয়াছেন। তাহার পরেও কত রুধির, কত তৈল উপহার দিয়াছেন । কত আলাপী লোকের নিকট হইতে গ্রিসীয়ান সিলিপর কেহ ঠনঠনের জোগাড় করিয়া আমলাদিগের সম্মুখে হাজির করিয়াছেন। তা হতেই বৃক্ষ ! তাহাতেই আজ বজবার মাস্তলে বড় বড় নিশান । কুঠিয়ালদিগকে দিয়েথুয়ে যা আছে তাহাতেই কষ্টেস্বষ্টে কোন গতিকে মানসন্ত্রম বজায় রাখিয়া এতদিন কাটাইয়াছেন । মনের কথা মনেই আছে । মুখ ফুটে প্রকাশ করা জমীদারশ্রেণীর বড়ই কষ্টের কারণ হইয়াছে। পরিণাম ফল প্রতি র্তাহীদের অনেকের লক্ষ্য পড়িয়াছে। প্রজার দিকে থাকিলেই বা কি হয় । নীলকরের পক্ষে তো যে প্রকারেই হউক, প্রকাতেই হউক, মানসন্ত্রম বজায় রাখিতে গোপনেই হউক, একভাবে আছেনই। আর প্রজার পক্ষে যে না আছেন তাহাও নহে। গোপনে গোপনে তাহাদের সহিত বিশেষ যোগ রাখিয়াছেন। আজ পর্য্যস্ত, কোন পক্ষের নিকটেই মনেমুখে, পরিচিত হন নাই যে তিনি কাহার ? রামের, না রাবণের ? নীলকরের না প্রজার—বড়ই কঠিন সমস্ত উপস্থিত! আর পা দিয়ে