পাতা:মীর মশাররফ হোসেন রচনাসংগ্রহ প্রথম খণ্ড.djvu/২৬৬

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

উদাসীন পুথিকের মনের কথা Š Œ ዓ সকলেই হাজির ৷ ছুইপ্রহর হইয়া বেল। কিছু গড়িতেই জিলার মান্যগণ্য-সন্তান্ত মহাশয়গণের দরবারে বার আরম্ভ হইল। চতুর্দিক হইতে সাধারণ প্রজার ৱিবোল এবং আল্লা-ধ্বনিতে জলস্থল কঁাপিতে লাগিল । সময় বুঝিয়াই বুঙ্কেশ্বর পারিষদগণসহ দরবারে পদার্পণ করিলেন । সে সময় প্রজাগণ উৎসাহের সুস্থিত দ্বিগুণ রবে আনন্দধ্বনি করিয়া উঠিল । জলস্থল কঁপাইয়া, বায়ুর সঙ্গে মিশিয়, সে অনন্ত জয়ধ্বনির প্রতিধ্বনি অনস্ত আকাশে হইতে লাগিল । চারিদিক হইতে “চুপ চুপ কথা উঠিয়া অতিঅল্প সময় ঐক্লপ গোলযোগেই কাটিয়া গেল। শেষে সকলেই নীরব । বঙ্গেশ্বরের পারিষদগণের মধ্য হইতে একজন বাঙ্গালী ভাষায় প্রজাগণকে সম্বোধন করিয়া বলিতে লাগিলেন— “বঙ্গাধীপের আজ্ঞাক্ৰমে আমি তোমাদিগকে বলিতেছি । তোমাদের প্রার্থনাপত্র দাখিল কর, আর মুখে যদি বলিবার থাকে তাহ বল”—মুখের কথা মুখ হইতে না ফুরাইতেই অতিকম হইলেও দশহাজাব মুখে একযোগে বলিয়া उंटैिल “দোহাই ধৰ্ম্মাবতার ! আমরা মরিলাম । নীলের জুলুমে আমরা মর গেলাম। আমাদের পেটে ভাত নাই। ধানের জমিতে জবরাণে নীল-বুনিয় লয়। মামরা কি খাইয়া বাচি ।” কথা শেষ হইতে না হইতে প্রার্থনাপত্র সকল হাতে হাতে বঙ্গেশ্বরের সম্মুখে উপস্থিত হইতে লাগিল। এক পরিষদে দরখাস্ত লইয়া কুলাইতে পারিলেন না । শেষ সমুদায় পারিষদ স্বয়ং বঙ্গাধীপ, স্থানীয় হাকিমান প্রভৃতি প্রজার প্রার্থনাপত্র হাতে লইয়া লাটসাহেবের দক্ষিণ-বামে রাখিতে লাগিলেন। পাঠক ! একেবারে উপকথা মনে করিবেন না। এত প্রার্থনপত্র দাখিল হইল যে লাটবাহাদুরের দুই পাশ্বে দুইটি কাগজের স্ত,প খাড়া হইল। একটি মাহুষ সেই স্তপের পাশ্বে অনারাসে গা ঢাকা দিয়া দাড়াইয়া থাকিতে পারে । তথাচ ইতি নাই, ক্রমেই হাতে আসিতেছে। মাঝে মাঝে প্রজার আর্তনাদ । নীলকরের দৌরাত্ম্য কথা, অত্যাচারের কথা লাটবাহাদুরের কানে আসিতেছে। মুখে যে কথা প্রার্থনাপত্রেও সেই কথা। তবে বিস্তাব্রিতরূপে লিখা । কিন্তু মূল একই। প্রজার মনের ভাব, প্রার্থনাপত্রের চুম্বকভাব বুঝিতে লাটবাহাদুর কেন, দরবারস্থ যাবতীয় লোকেরই বুঝিতে বাকি রহিল না। নীলকরের অত্যাচার যে প্ৰজাগণের অসহনীয় তাহাও Y ግ