পাতা:মীর মশাররফ হোসেন রচনাসংগ্রহ প্রথম খণ্ড.djvu/২৬৮

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

উদাসীন পথিকের মনের কথা ९९० কি জমিদার তোমাদের প্রতি কোনরূপ অত্যাচার করিলে প্রথম থানায় জানাইবে । পরে তাহারা যাহা বলিয় দেয় অর্থাৎ মাজিষ্টারসাহেরেব নিকট জানাইতে বলিলে তাহাব নিকট জানাইবে । তিনি তোমাদের নলিশ শুনিবেন—তোমাদিগকে রক্ষা করিবেন । তোমরা যাহাতে সুখে থাক তাহার উপায় করিবেন। তোমরা ইচ্ছাপূর্বক যদি নীলের আবাদ না কর তবে তোমাদিগকে জোর করিয়া কেহই নীল বুনানি করাইতে পারিবে না। যে জোর জবরাণ করিবে সেই শাস্তি পাইবে । বড, ছোট, গরিব, ধনী, কৃষিপ্রজ, জমিদার কি নীলকর বলিয়া বিচারে কোন তব বিশেষ নাই । বিচারাদালতে সকলেই সমান । এমন বিচারে আর তোমাদেব ভয়েব কাবণ কি ? মন্দ কাজ করিলে তোমরা ও যেমন শাস্তি পাইৰে, নীলকব সাহেব ও তেমনি শাস্তি পাইবেন । যে অপরাধে তোমবা ফাটক খাটিবে, সেই অপবাধে নীলকব সাহেবও জেলে যাইবেন । বিচারাদালতে কোন প্রভেদ নাই । কোনরূপ খাতির নাই । কাহারও ইচ্ছাব বিরুদ্ধে কেহ কোন কাজই করাইতে পাবে না । তোমাদের ইচ্ছা হয় তোমরা নীল-বুনিয়া তাহার মজুরী লও। ইচ্ছ না হয় নীল-বুনিও না, মজুবী পাইবে না। তমুখে বলিয়া উঠিল-ধৰ্ম্মাবতার ! আমরা মজুরি চাই না। ভিক্ষ কবিয়া খাইব তবু নীলের বীজ আব হাতে করিব না । মজুরী আমাদেব মাথায় । আমরা কিছুতেই আব নীল বুনিব না। পারিষদ সাহেব : “শুন ! আবও শুন । সে তোমাদের ইচ্ছা । অনিচ্ছায় তোমাদিগের দ্বারা কেহই কিছু করাইতে পারিবে না। আর তোমাদের এই সকল দরখাস্তের বিচার কলিকাতায় গিয়া হইবে । তোমরা ইহার খবর সত্বরেই জিলার হাকিমান সাহেবগণের মুখে শুনিতে পাইবে । আর তোমাদিগকে আভাষ বলিতেছি, শালঘর মধুয়ার কুঠির নিকটে শীঘ্রই এক নূতন মহকুমা খোলা হইবে। পদ্মাপারের প্রজাকে পদ্মাপার হঠযা আর পাবনায় আসিতে হইবে না। প্রজাগণ অস্তরেব অস্তঃস্থান হইতে মহারাণীর জয় ! জয় মা ভারতেশ্বরীব জয় ! ঘোষণা করিতে করিতে আনন্দে নাচিয়া উঠিল। দুই হাত তুলিয়া লাটবাহাদুরকে আশীৰ্ব্বাদ করিতে লাগিল। এত দুঃখের পর, এত যন্ত্রন এত ক্লেশের পর প্রধান রাজপুরুষের মুখে এইরূপ আশ্বাসবাণী শ্রবণ করিয়া আনন্দে-বিহ্বল প্রায় হইল। দারোগা, জমাদার, প্রহরী, সাস্ত্রী কেহই আর সে গোলযোগ নিবারণ