পাতা:মীর মশাররফ হোসেন রচনাসংগ্রহ প্রথম খণ্ড.djvu/২৬৯

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

মীর মশাররফ হোসেন রচনাসংগ্ৰহ م وهR করিতে পারিল না । পুনঃ পুনঃ জয় ঘোষণা, পুনঃ পুনঃ আশীৰ্ব্বাদ– হৃদয়ের গভীর স্থান হইতে আশীৰ্ব্বাদ । অতি কম হইলেও কুড়ি হাজার কণ্ঠ, হইতে শ্ৰীশ্ৰীমতী মহারাণীর জয়ধ্বনি হইতে লাগিল—সেপাই, সান্ত্রী, প্রহরী, দারোগা, জমাদার স্বয়ং মাজিষ্টার সে গোলযোগ নিবাবণ জন্য চেষ্টা করিতে লাগিলেন। কেহই কিছু করিতে পারিলেন না। প্রজার আনন্দ যেন আর ধরে না। জবরানে কেহ নীল-বুনানি করিতে পারিবে না। এই মহামূল্য কথায় প্রজার আনন্দ আজ হৃদয়ে ধরে না। দুহাত তুলিয়া নাচিয়া শ্ৰীশ্ৰীমতী মহারাণীকে আশীৰ্ব্বাজ করিতে লাগিল । সে জয়ঘোষণা—সে আশীৰ্ব্বাদে বাধা দেয় কার সাধ্য ! ঘোর উন্মত্ত। কে কাহার কথা শুনে, কে আজ কাহাকে মান্য করে । কাব কথায়, কার নিবারণে সে মত্তত হইতে ক্ষান্ত হয ? মনে অন্য কোন কথা নাই, ভবিষ্যত ভাবনার দিকে কাহারও মন নাই, গ্রামে ফিরিয়া গেলে নীলকরের হাতে জাতি, মান, প্রাণ বজায় থাকিবে কিনা ? যেটুকু আছে—যাহ অবশিষ্ট আছে তাহ থাকিবে কিনা ? বাড়ি গিয়া স্ত্রী-পরিবাব, সন্তানসন্ততি, ভাই, বন্ধু, পরিজনের মূখ দেখিতে পাইবে কিনা ? আজিকার এ ঘটনাব পরিণাম ফল কি ? ইহার সীমা কোথায । সে সকল কথার দিকে কাহারও মন নাই। জয়রবে উন্মত্ত। আশীৰ্ব্বাদ করিতে করিতে কণ্ঠ শুষ্ক । স্থানীয হাকিমান, শান্তিবক্ষক মহোদয়গণ, এই উত্তপ্ত সুবর্ণমাখ, রাজবচনাবলী তাহদের দ্বারা সম্পূর্ণরূপে বৃক্ষ হইবে কি-না ? উহার রক্ষণ করিবেন কি-না ? রক্ষা করিতে পারিবেন কি-না ? নিরীহ প্রজার প্রাণ, নীলকর রাক্ষন্সের বিষময় বিশালদগু হইতে রক্ষা করিতে পারিবেন কি-না ? অসীম সুখসাগরে ভাগিয আবার বিষাদতরঙ্গে হাবুডুবু খাইয়া একেবারে ডুবিতে হইবে কি-না ? ক্রমে নবজীবন স্থায়িত্ব হইবে কি-না ? হইবার আশা আছে কি-না ? মৃে বিষয় কাহারও মনে নাই। আনন্দে বিস্তোর, জয়রবে বিহ্বল, জয়রবে মত্ত, ক্লার কথা কে শুনে ? সুতরাং সভা ভঙ্গ—বঙ্গেশ্বর পরিষদসহ মোনামুখীতে উঠিলেন । স্থানীয় জমিদার, নীলকর, মহাজন, সন্ত্রাস্ত মহোদয়গণের আহবান হইল। ক্রমে সকলেই সোলামুখীতে যাইয়া লাটবাহাদুর সহিত সাক্ষাৎ পরিচয় করিয়া সেলাম বাঙ্গাইয়া বিদায় হইতে লাগিলেন । চলুন আমরা প্ৰজাগণের সঙ্গে সঙ্গে পদ্মাপার হই। আর তাহারা আজ থে মহামূল্য রত্ন লাভ করিয়া চলিল; চলুন ! তাহাদের মনের ভাবটা ভাল করিয়া