পাতা:মীর মশাররফ হোসেন রচনাসংগ্রহ প্রথম খণ্ড.djvu/২৭

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

yb" মীর মশাররফ হোসেন রচনাসংগ্ৰহ ভাবী গণমা শ্রবণে যে কি পর্যাপ্ত আশ্চর্যাম্বিত হইলেন, তাহা প্রিয় পাঠকগণ অনায়ালেই ৰুঝিতে পারিতেছেন। রাজা কৃতাঞ্জলিপুটে কাতর বচনে ব্রাহ্মণকে কহিলেন, ঠাকুর । আমার এ পাপ কিসে মোচন হইবে ? ব্রাহ্মণ উত্তর করিলেন, মহারাজ ! এ ত যৎসামান্য পাপ নহে যে, ব্রাহ্মণতোজন এবং দান-ধ্যান কবিলেই বিমোচন হইবে ; এ গুরুতর পপি, সহজে মোচন হইবার নয়। রাজা পুনরায় বলিলেন, ঠাকুর । এমন গুরুপাপ কিসে সংঘটিত হইল ? গণক ব্রাহ্মণ কিয়ৎকাল চিন্ত কবিয়া বলিলেন, মহাশয়! আপনাৰ দোষে এ পাপ জন্মে নাই, আপনার দুহিতাই ইহার মূলকরণ । আপনিই বিবেচনা করুন, রাজকন্যার পাণিগ্রহণাণে কতশত রাজপুত্র এবং সন্ত্রাস্ত ভদ্রসস্তান আগমন করিয়াছিলেন । কন্যাব মোহিনী মায়াপাশে আবদ্ধ হইয় তাহার! সকলেই সমস্ত ধনে জলাঞ্জলি দিয়া চিরকাবাগাবে অশেষ যন্ত্রণ ভোগ করিতেছেন। আহা ! এ কি সামান্য দুঃখের বিষয় যে, বিবাহ-আশে প্রথমে ধনসম্পত্তি বিনাশ, শেষে জীবনাশে নিরাশ । হে করুণাময় জগদীশ্বর । তোমার যথার্থ বিচাব । মহারাজ ! বিবেচনা করুন, এ কি সামান্য পাপ । মহারাজ ! আপনিই বিবেচনা করুন, কারাস্থ যুবকগণের অন্তরে কিরূপ ভাবের উদয় হইতেছে এবং তাহাদের পিতামাতার অন্ত:করণেই বা কিরূপ ভাবের আবির্ভাব হইতেছে। রাজ ও অমাত্যবর্গ স্বমস্তের এই সমুচিত বাক্যের উত্তর প্রদানে সমর্থ হইলেন না, সকলেই মস্তক অবনত করিয়া রহিলেন । ক্ষণকাল পরে সভাস্থ সভ্যগণ সুমস্তের নিকট গলবস্ত্র হইয়া করযোড়ে বলিতে লাগিলেন, প্রভো ! এখন উপায় কি দেখিতেছ, আপনি ভিন্ন এখন আর কেহই এ বিপদ হইতে রক্ষাকর্তা নাই। সুচতুর স্বমস্ত ক্ষণকাল চিন্তা করিয়া বলিলেন, এ পাপ সহজে বিমোচন হইবার নহে, আমার সাধ্য নাই যে মহারাজকে এই ঘোরতর ৰিপদ হইতে উদ্ধার করি। তবে কলা মহারাজের বহিদ্বর্ণরস্থ সরোবরতটে এক সন্ন্যাসী আগমন করিবেন, তিনি যদ্যপি সদয় হন, তাহ হইলেই উদ্ধারের উপায় হয় । । স্বমস্তুের মুখে এতদ্বিবরণ শ্রবণে রাজা কৃতাঞ্জলিপুটে বলিলেন, দ্বিজবর ! সন্ন্যাসীর আগমন পৰ্য্যস্ত আপনি এস্থানে অবস্থান করিলে উপকৃত হই। স্বমস্ত বলিলেন, মহারাজ ! আমি দূরিভ্র যাজক ব্রাহ্মণ, একস্থানে দুদিন থাকিলে চলে মী । ভগবানের কৃপায় আপনি বিপদ হইতে উদ্ধার হইরেন । পুনৰ্ব্বার সাক্ষাৎ হইবে ।