পাতা:মীর মশাররফ হোসেন রচনাসংগ্রহ প্রথম খণ্ড.djvu/২৭১

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

૨૭૨ মীর মশাররফ হোসেন রচনাসংগ্ৰহ ভিন্ন—সে কথাও ভিন্ন । সে কথার মূল্য অনেক । ভাষা ! ইংরেজেব যে কথা সেই কাজ । দ্বিতীয় : আচ্ছা ! আর একটা কথা। আমরা এতদিন না বুঝে কত বোঝাই যে মাথায় বয়েছি, কত ভূতেরই যে বেগাব খেটেছি, কতজনেরই যে বিনাম সোজা করেছি। না বুঝে কবি না পায ধরেছি। কত কষ্টই ভোগ করেছি। তার আব ইতি নাই । প্রথম ? ভায় । যা হবার হয়েছে। এখন দেখেশুনে, ভুগে পাকা না হয়ে থাকি, এট,কু যেন শক্ত হয়েছি। আর এ-কয়েকদিনে দেখলেন অনেক শুনলেমও অনেক । ধাধা কেটে গিয়েছে । নীলকর সাহেবরা যে আমাদেব রাজা নয় সে জ্ঞানটা ভালই জন্মেছে। ভায়া ! বাজার ভাবই ভিন্ন। দেখলে না লাটসাহেবের কাছে জজ, মাজিষ্টার যেন কিছুই নহে । চুপ চাপ কথাটি মুখে নাই। মাছিটি পর্য্যন্ত নড়ে না। সকলেই যেন ভয়ে ভয়ে পা ফেলে, ভয়ে ভয়ে তাকাম, ভয়ে ভয়ে কথা কয় । নীলকব সাহেবর কে কোথায় পড়ে রইল, ভায় । দেখেছ তো ? লাটসাহেব তাহাদিগকে একটি কথাও জিজ্ঞাসা করলে না। খাতির তওয়াজার নামও করলে না । যেমন আমরা তেমন তাহারা । মফস্বলে দারোগী, জমাদাবদের লাফানি ঝাপানি দেখে কে ? বাপবে । বরকন্দাজের তেড়িমেরী কথাই বা কত । আজ কেমন দুরস্ত ? লাটসাহেবের কাছে কেমন সোজ! যোড়হাত—এক হাত দু হাত নয়, ভায়া ! একেবারে পঞ্চাশ হাত তফাৎ ! খাড়া পাহারা । বাপবে বাপ ! ஆ বড় বড় হাকিম, বড় বড় জ্যাস্ত-বাঘ । আজ লাটেব সম্মুখে যেন বিড়াল। চু শব্দটি মুখে নাই। দ্বিতীয় ঃ ভায়া ! সত্যি সত্যি কি আর নীল হবে না ? প্রথম ; ভায়া ! শুনলে কি নীল আর হবেই না। আমরা যদি ইচ্ছা করে বুনি তবে হবে । নীলকর সাহেবরা জবরান করে আর বুনিতে পারিবেন না। আমাদের ধানের জমিতে আর জবরানে মার্ক দিয়া নীলজমির সামিল করিতে পরিবে না। যে জবরাণ করতে খাড়া হবে সেই মারা যাবে। ভায়া ! সে কি যে সে মুখের কথা নিশ্চয় যেন, যে অত্যাচার করবে সেই জেলে যাবে। দ্বিতীয় : জেলে তো যাবে। ধরে নিয়ে গিয়ে যদি আগেই কাজ ঠা গু করে দিলে তখন জেলে গেলেই কি, আর ফসিতে ঝুলালেই আমাদেব লাভ কি ? আমরা তো সারা হলেম ।