পাতা:মীর মশাররফ হোসেন রচনাসংগ্রহ প্রথম খণ্ড.djvu/২৭৩

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

3e;g মীর মশাররফ হোসেন রচনাসংগ্ৰহ নুতন কৰা, নূতন ঘটনা, মানুষের মুখে নূতন নূতন খুৰ চৰ্চা হয়। বিশেষ মহাস্বার্থের জাতাস থাকিলে নিরাত্রে সহস্রবার মুখে আওড়াইলেণ্ড মনে সুখ জন্মে না। প্রজমহলে দিবারাত্রি ঐ কথা। কুঠির কথা—কেনীর কথা, সর্দার, গাঠিয়ালের কথা, আমীন, তাগাদগীরের কথা-জুলুম, বদিয়তের কথা সৰ্ব্বদ তোলপাড় হইতে লাগিল । কিন্তু আগে যেমন নামেই আতঙ্ক নামেই হৃৎকম্প, নামেই অজ্ঞান, তাহী যেন আর এখন নাই । সকলে একজোট, এক পরামর্শ থাকিলে এক কেনী কি করিবে ? নীলকর আমাদের রাজা নহে। তাহারাও প্রজ, আমরাও প্রজ,—রাজার চক্ষে সকলেই সমান তখন আর ভয় কি ? এই কথা কয়েকটি প্রজার অন্তবের অন্ত:স্থান প্রবেশ করাতেই ভাবের ভিন্ন, সাহসের সঞ্চর, স্বদিনের লক্ষণ—তাহাতেই পথিক বলিতেছে প্রজার নবজীবন লাভ । অথবা চিরবন্দীর—হঠাৎ মুক্তিলাভ । কয়েকদিন এইরূপ মনের আনন্দেই কাটিয়! গেল। গ্রামের মাখাল মাথাল, পরামাণিক (প্রধান) দুই-চারজন একত্র হইয়া মাঝে মাঝে অতি চুপে চুপে পরামর্শ করে । কি পরামর্শ তাহারাই জানে। একদিন শুনা গেল যে একজন কাড়াদার গ্রামে গ্রামে কাড়া মাখিযা উচ্চস্ববে বলিয়া ফাইতেছে, ‘ভাই সকল ! কাল বেলা দুই প্রহরের সময় সা গোলাম সাহেবের বাটিতে এই অঞ্চলের সমুদায় প্রজার এক বৈঠক হইবে । এইদেশ হইতে যাতে নীল একেবারে উঠিয়া যায় সেইজন্য বৈঠক হইবে । সকলেই বৈঠকে যাইও । দেশের ভালর জন্যই বৈঠক, সকলেরই যাওয়া দরকার ।” দশজনে একত্র হইয়া কাৰ্য্য করিলে যে লাত অাছে, তার প্রজাগণ তখন বেশ বুঝিয়াছিল। পরদিন নির্দিষ্ট সময়ে, ছেলেয়-বুড়োয়, হিন্দু-মুসলমানে একত্রে সা গোলামের বাড়িতে উপস্থিত হইল, দেশহিতকর বৈঠকে যোগ দিল । চারদিক হইতে প্রজাগণ আসিতে আরম্ভ করিল। উপরে আঙ্গিনাজোড়া সামিয়ানার নিচে শতবনজীর বিছানা। অতিঅল্প সময় মধ্যে বৈঠকপ্রাঙ্গণ পুরিয়া আঙ্গিনার দক্ষিণপশ্চিম পাশ্বে সামিয়ানার বাহিরে উলঙ্গ শিরে মনের আনন্দে দাড়াইয়া গেল । বর্ষাকালের সেই উত্তপ্ত সূৰ্য্যতাপ, ক্ৰক্ষেপ নাই, শুনায়াসে সহিয়া বৈঠকে যোগ ঙ্গি । এবং মনসংযোগে কথাসকল শুনিতে লাগিল । বৈঠকের প্রধানকর্তী কুইটি জমিদার। একজন হিষ্ণু একজন মুসলমান । বলা বাহুল্য মুসলমানটি সা গোলাম। হিন্দু জমিদারটির এই মন্ত্র পরিচয় যে তিনি