পাতা:মীর মশাররফ হোসেন রচনাসংগ্রহ প্রথম খণ্ড.djvu/২৭৪

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

উদাসীন পখিকের মনের কথা २●é দেশের মধ্যে সৰ্ব্বসাধারণের নিকট মহামাননীয় । সকলেই তাহার কথায় বিশ্বাস করে, সকলেই তাহার কথা ভনে। সেই সৰ্ব্বজনপূজিত মহামহিম মহোদয দ গুীয়মান হইয়া মৃদুস্বরে অতিমিষ্টভাবে বলিতে লাগিলেন : “সভাস্থ হিন্দু-মুসলমান মহোদয়গণ নীলকরেব অত্যাচারে আমরা সকলে অস্থির হইয়াছি । জমিদার, তালুকদার, মহাজন, জোতদার, কৃষক, মধ্যশ্রেণী, ধৰ্ম্মযাজক, গুরুদেব, গোসাই, পীর, ফকির, এমন কি মুটেমজুর পর্য্যস্ত কেনীর অত্যাচারে অস্থির । তাহা কাহারও অবিদিত নাই। এই উপস্থিত বৈঠকে অকুমান পাঁচহাজীব লোক উপস্থিত আছেন । বোধহয় এই পাঁচহাজার লোকের মনেই কেনীর অত্যাচাব-কাহিনী সৰ্ব্বদা জাগ্রতভাবে, জলন্ত আকারে গাথা রহিয়াছে । সেসকল কথা, সেসকল অত্যাচারের কথা বিস্তারিত বর্ণনা করা নিম্প্রয়োজন । কেনা ভুগিতেছে, কে-না জলিতেছে, কে-না কেনীর অত্যাচার আগুনে পুড়িতেছে ? এতদিন আমরা জানিতে পারি নাই। আমাদের মূর্খতাহেতু আমরা বুঝিতে পারি নাই যে, আমাদের প্রতিপালক এবং সৰ্ব্ববক্ষক রাজা নীলকর নহে। নীলকর আমাদের হৰ্ত্তাকর্তা বিধাতা নহে। ভ্রমেই আমাদেব সৰ্ব্বনাশ ঘটিয়ছে । ভ্রমেই আমাদেব এতে কষ্ট উপভোগ কবাইয়াছে। পাবনার দরবারে আমরা বেশ বুঝিতে পারিয়াছি যে আমাদের বাজার দয়ার পাব নাই । গুণেব সীমা নাই । নীলকরই হউন, আর বিলাতবাসী অন্য কেহই হউন, আতা চারী হইলে, আমাদের প্রতি অন্যায় অত্যাচার-অবিচাব করিলে, রাজহস্ত হষ্টতে তাহার নিস্তার নাই। রাজবিচাব হইতে কিছুতেই অত্যাচারীর অব্যাহতি নাই । রাজচক্ষে তাহার এবং আমরা উভয়ই সমান । এই কথার প্রমাণও ঐ দরবারেই পাওয়া গিয়াছে। এখন আমাদের কৰ্ত্তব্য কি ? কেনীর হস্ত হইতে রক্ষা পাওয়ার উপায় কি ? সে কি সহজে ছাড়িবে ? সে নর-ব্যাস্ত্র এতদিন যে বসে রসনা পরিতৃপ্ত করিয়াছে, উজর পরিপোষণ করিয়াছে, তাহার স্বাদ কি সে হঠাৎ ভুলিয়া যাইবে, না ভুলিতে পরিবে ? তাহার অনায়াস লাভের আশা হইতে সে কি সহজেই হস্ত সঙ্কোচিত করিবে, না মন ফিরাইবে ? কখনই নহে । অতি কম হইলেও বার্ষিক পাচলক্ষ টাকা আয়ের পথ সে কি লঙিয়া ভিড়িয়া না দেখিয়া অমনি বন্ধ করিবে ? কখনই সহে ৷ পূৰ্ব্ব হইতে জামাদের সতর্ক হওয়া আবশ্বক, পূৰ্ব্ব হইতেই রক্ষার পথ পরি