পাতা:মীর মশাররফ হোসেন রচনাসংগ্রহ প্রথম খণ্ড.djvu/২৭৭

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

Q&br মীর মশাররফ হোসেন রচনাসংগ্ৰহ মুহূৰ্ত্ত পরে বৈঠকের প্রায় বার আন কণ্ঠ হইতে "হরিবোল” ছবিবোল” ধ্বনি উখিত হইয়। বায়ুবিমান এবং সামান্ত আবরণ চন্দ্ৰতাপ ভেদ করির অনন্তক্ষেত্রে অনস্তনামের সহিত মিশাইয়া গেল। মিশাইতে মিশাইতে অবশিষ্ট কণ্ঠ হইতে “আল্লাহ আল্লাহ” রবে চারিদিক কঁপাইয়া তুলিল। সে রবের প্রতিধ্বনি সহস্ৰ চপলায় চালিত হইতে হইতে স্থিরবায়ু ভেদ করিয়া—ঈশ্বরের আসন স্থান “তাহ - তাস সারা” চিন্তার অগম্যস্থান পর্য্যন্ত প্রবেশ করিল। ঈশ্বরে সাক্ষি করিয়া, পৰিত্ৰ জিনিষ সম্মুখে রাখিয়া মনের বেগে অনেকেই স্পষ্ট করিয়া প্রতিজ্ঞায় বদ্ধ হইল । সকলের মনেই নতুনভাব, এ যে কি ভাব তাহা সেই অনন্ত ভাবময়-ভূত-তীবন ভিন্ন মহাভাবুক ও ভবভাবনা সংযুক্ত সহস্ৰ সহস্ৰ মহাত্নতবেরও বুঝিবার সাধ্য হইল না। সকলে পরস্পব বুকে বুক মিশাইয়া আলিঙ্গন আরম্ভ করিল। সে পবিত্র ভাবময আলিঙ্গন, ভাবের মনমত তুলি ধরিয়া যথা যথা আকিয়া দেখাইতে পথিক অক্ষম । তবে সে সময়ের হাবভাবে যে ভাবটুকু সামান্যভাবে অতুভব হইয়াছে, আকারে, ইঙ্গিতে, আভাষে, আলিঙ্গনের ভাবাভাবে বোঝা গেল যে সকলেই সকলকে কি যেন দিল । সকলেই যেন তাহা মনের আনন্দে গ্রহণ কবিল। অথচ কাহারও কোন বিষয়ে অভাব হইল না । দাতা গ্রহীতায় সমান আনন্দ, সমান ভাব, সমান প্রণয়। প্রতিদানের যথার্থ প্রমাণই মন খুলিয়া হৃদয়ের সহিত আলিঙ্গন । বুকে বুক মিশাইয়া পরস্পরের মিলন । সে অপূৰ্ব্ব পবিত্র ভাব চন্দ্রা-তপতলে কতক্ষণ বিরাজ করিয়া সূৰ্য্যতাপে তাপিত, দগ ধিভূত হৃদয় শীতল কবিতে চন্দ্ৰাতপ বাহিরে নানা দিকে ছড়াইয়। পড়িল । এদিকে সা গোলাম ধীর এবং গম্ভীরভাবে দাড়াইয়া বলিতে লাগিলেন যে, প্রতি গ্রামেই এই বৈঠকের একটি শাখ বৈঠক হউক। শাখাবৈঠকে গ্রামের হিত-অহিত, ভাল-মন্দ বিষয় প্রতি সন্ধ্যায় আলোচিত হউক। কোন কথার মীমাংসা আবশ্যক হইলে সেই স্থানেই উপস্থিত বৈঠকে মীমাংসা হউক । এক বৈঠকে না মিটে পরদিন বৈঠকে আবার সে বিষয়ে আলো চনা হউক। তাহাতেও যদি মীমাংসা না হয়, সন্দেহ থাকে, আমাদের সাপ্তাহিক বৈঠকের সময় গ্রামে গ্রামে বৈঠকের প্রধানের মধ্যে যিনি আসিয়া যোগ দেবেন, শাখ বৈঠকে মীমাংসা না হওয়া প্রস্তাব সদরবৈঠকে তিনিই মীমাংসার জন্য প্রস্তাব করিবেন । সকলের বিবেচনায় যাহা সাব্যস্ত হয় তাহাই বলবত থাকিবে । কেনীর টাকা কম নাই। দশ বৎসর প্রজার সহিত লড়িলেও সে পিছু