পাতা:মীর মশাররফ হোসেন রচনাসংগ্রহ প্রথম খণ্ড.djvu/২৮০

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

উদাসীন পথিকের মনের কথা & ግ > বাধ্য, নীলকরও আপন মাল বুঝিয়া লইতে বাধা । এই কথা লইয়া প্রথমত: কিছু গোলযোগ হইবে বুঝিতেছি। বিচার আদালতে যখন আমরা প্রজাদত্ত-চুক্তিপত্র দাখিল করিব, তখন আর ওকথা থাকিবে না। তোমরা আগেই সাবধান হইবে। যখন সে চুক্তিপত্রের দরকার হয়, তাহা যেন পাওয়া যায়। তবে প্রজারা যে জোটবদ্ধ হইয়াছে। আমি বাঙ্গালাদেশে অনেক দিন কাটাইলাম, বাঙ্গালার খবর জানিতে আমার বাকি নাই । তোমাদের কথা, তোমাদের প্রতিজ্ঞ, তোমাদের দশ জনের এক হওয়া আমি সকলি জানি । আপন দেশের প্রতি তোমাদের যত মায়া, তাহাও আমার বিলক্ষণ জানা আছে । সকলে এক পরামর্শ, এক প্রাণ হইয়। কাৰ্যা করার ক্ষমতা তোমাদেব যত আছে তাহ কেনীর জানিতে বাকি নাই। দিন দুই হৈ হৈ ! তাহার পর যে সেই । হয়ত দুহাত নীচেই নামিতে হইবে । ও সকল জোট ও সকল বৈঠক অনেক দেখিয়াছি—আমার কিছুই হইবে না। তাহদের কিছু ন হইলেও মাঝখানে কতকগুলি লোকের এই সুযোগে বেশ দশ টাকা লাভ হইবে । তোমরা দেখ । ঐ সকল টাকাকড়ি লইয়াই উহাদের আপসে আপসে ঝগড়া, মারামাবি নিশ্চয়ই হইবে । শেষ ফল আদালত পর্য্যস্ত গড়াইবে । গায়ে পডিয়া এক দল আমার আশ্রয় লইবে । দাদনেব টাকা না লইয়া চুক্তিপত্র লিখিয়া দিবে। আমি যথার্থ বলিতেছি, তোমরা নিজেরা নিজকে যতদিন বিশ্বাস না করিবে ততদিন তোমব৷ কিছুই কবিতে পারিবে না । তোমরা কার্য্যেব শেষ চিন্তা করিতে অবসর পাও না। পরিণাম ফলেব দিকে দৃষ্টি করিতে নিতান্তই নাবাজ ! সকল কাজেই বাস্ততা, হৃদয়েও বল বেশি নাই । নিজের ঘর সামাল না করিয়া পরের ঘরে আগুন দিতে খুব পটু ৷ ধবিতে গেলে কোন শক্তিই তোমাদের নাই । কিন্তু লম্ফেঝম্পে খুব মজবুত। আমি স্পষ্ট বলিতেছি, সকলে এক জোটবদ্ধ হইয়া নীল উঠাইয়া দেয়, আমার দুঃখ নাই। এদেশে ইংরেজদিগেরই যে নীলকুঠি আছে, দেশীয় লোকের নাই ইহাও নহে! আমার নীল যদি উঠিয়া যায় তাহা হইলে রতনবাবুর কুঠিও মারা যাইবে। ঠাকুরবাবুর কুঠিই কি থাকিবে ? মীবমহাম্মদ আলীর কুঠিই কি চলিবে ? এই প্রকার যত বাঙালী জমিদারের কুঠি, যেখানে যাহা আছে তাহাও থাকিবে না। আমার জমিদারি কেহ কীড়িয়া লইতে পারিবে না। ও সকল কথা কিছুই নহে। তোমরা সাবেক-বদস্তর কার্য্য চালাইতে থাক। এবারে