পাতা:মীর মশাররফ হোসেন রচনাসংগ্রহ প্রথম খণ্ড.djvu/২৮২

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

উদাসীন পথিকেবু মনের কথ। ২৭৩ সকল যেন জলে ভাসিয়া আসিতেছে। কে জানে কতক্ষণ হইতে ভাসিয়া ঘাই তেছে ? কে জানে গৌরীজলে ভাসিতেছে কি না ? পদ্মার খরতর স্রোতে পদ্মার প্রশস্ত চবেব অপর্ষ্যাপ্ত নীল, পৰ্ব্বতাকারে ভাসিয়া যাইতেছে কি না তাহা কে জানে ? কুঠিময় সোর পডিয়া গেল যে, নীল ভাসিয়া যাইতেছে। কতলোক বড় বড বঁাশ, বড় বড় লগি হাতে করিয়া বিনা উদ্দেশ্রে নদীর কিনারায় আসিয়া দাডাইল । বাশ ফেলিল, লগি জলে ভাসাইল, ভাসমান নীল বোঝা আটকাইবার জন্ত নানা প্রকাব চেষ্টা কবিল, একটিও আটকাইতে পারিল না। কেন আটকায় ? দুই এক বোপ ! আটকাইলে কি হইবে ? আর সমুদায় আটকাইয়া কি বা হইবে ? ইহাতে কোন রূপ সাব অংশ নাই, সমুদায় জলে ধুইয়া গিয়াছে। বিশেষ এত নীল একদিনে জাতদিয়া মাল বাহিব করিবার সাধ্যও কাহার নাই । বোঝার সঙ্গে সঙ্গে দুই একখানি নৌকা দেখা দিল । স্রোতগতিতে নৌকা ভাসিয়া আসিতেছে । ডিহিব আমীন, তাগাদগীর, সাহেবের চাকরগণ চিৎকার করিয়া বলিতেছে—হুজুব । সৰ্ব্বনাশ হইয়াছে। পদ্মা, গৌরী, কালীগঙ্গা এই তিননদী হইয়া এই প্রকাব নীল ভাসিয়া যাইতেছে। প্রজাগণ রাতারাতি নীল কাটিয়া ভাসাইয়া দিযাছে । যাহা বাকি আছে, তাহাও আজ রাত্রে আর রাখিবে না আমাদিগকে শাসাইয, ভয় দেখাইয়া বলিয়াছে যে, “কুঠিতে খবর দিতে যাইতেছ ফিরিয়া আসিয়া আর বাডি, ঘব, দোর, পরিবারের মুখ দেখিতে হইবে না। যাও জন্মের মত নীলের পাছে পাছে ভাসিয়া যাও।” কেনী স্বচক্ষে নীলের এই দুরবস্থা দেখিয়া মনে মনে বড়ই দুঃখিত হইলেন। প্রকাশ্বে বলিলেন, “কোন চিন্তা নাই। দশ বছর নীল ন হইলে কি কেনী মারা যাইবে আর এই সকল নীল, যাহারা কাটিয়া গাঙ্গে ভাসাইয়াছে তাহারা কি অমনি বাচিয়া যাইবে ? এখনই রওয়ান হও । এক এক দলে পঞ্চাশ ষাট জন লাঠিয়াল সর্দার লইয়। রওয়ানা হও । যে গ্রামে নীল আছে সে গ্রামের লোককে কিছু বলিও না। যে গ্রামে দেখিবে নীল নাই, সে গ্রাম আর রাখিৰে না। বাড়ি, ঘরদোর, গাছপাল ভাঙ্গির, কাটির ঐ প্রকার জলে ভাসাইবে । আমি কাল এই সময় ঐ সকল প্রজার ভাঙ্গাঘর, কাটাগাছ, গরুবাছুর, এই জলে ভাসিয়া যাইতে দেখিতে চাই। যত টাকা লাগে ব্যয় কর । লাঠিয়াল, সর্দার যে যত সংগ্ৰহ করিতে পার সংগ্ৰহ করিয়া আন । আর যাহার এই সকল কার্য্যেৰ গোড়া— Sbr