পাতা:মীর মশাররফ হোসেন রচনাসংগ্রহ প্রথম খণ্ড.djvu/২৮৫

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

२१७ মীর মশাররফ হোসেন বচনাসংগ্ৰহ মীবসাহেব জ্ঞানবান। পারিষদগণও অজ্ঞান নহেন । মাথার মঞ্জ, শরীরের রক্ত, কাহারও তরল নহে । কেহই পাতলা লোক নহেন ! নুতন সংলারী নহেন, নানা বিষযে পবিপক্ক। সকল বিষয়েই পাকা। এত পাকাপাকির মধ্যে এমন একটি কাচা কাৰ্য্য হইতেছে যে, তাহার আভাষে ইঙ্গিতে, আকারে প্রকারে প্রকাশ কৰু ভিন্ন বিস্তাবিত প্রকাশ করিতে পথিকেব সাহস হইতেছে না ! সেই বামাকণ্ঠই ঘটনার মূল। সেই নুপুর-ধ্বনি সময়ে সময়ে যে দৌলতননেসার কর্ণে প্রবেশ করিত, সেই ধ্বনিই ঘটনার মর্শগত অস্তিরিকভাব ও আভাষ । দৌলতননেসা স্বামীসে হাগিনী । ৰিশেষ সস্তানসস্তুতি হইযা লে সোহাগ আরও বৃদ্ধি পাইগাছে । বৃদ্ধি হওয়ার কথা । স্ত্রীধনে ধনবান, স্ত্রী কল্যাণে অপৰিমিত সুখ ভোগ হইলে, সে স্ত্রীর আদর কোথায় না আছে ? স্ত্রীর অকুঞ্জিম ভালবাসা আছে বলিয়াই স্ত্রীধনে অধিকার । রূপসীব সহ হইল না। রূপসীর চেষ্টা স্বামীঙ্গীতে মনোমালিন্ত ঘটাইয়। নিজে মুখী হয় । বহুদিন হইতে চেষ্টা কবিয়াও কুতকার্য্য হইতে পারিতেছে না। মীরসাহেব রূপসীকে ভালৰাসেন, যত্ন কবেন, আদর করিম কাছে বসান, গান ভনেন । এ সকল কথা দৌলতননেসার কানে তুলিয়া দিয়াও তাহার মন, স্বামীপদ হইতে টলাইতে পারিল না । তখন অন্য চাল আরম্ভ করিল। অর্থ সহায়ে সাহায্যকারীরাও জুটিয়া গেল ! দৌলতননেসা, রূপসীর কথা অনেকের মুখেই শুনিতেন । তাহার সেই পূৰ্ব্বভাৰ, পূৰ্ব্বকথা। রূপসীর মনে এই কথা যে, মীরসাহেব দৌলতননেসায় যেরূপ অকৃত্রিম প্রণয়ভাৰ বর্তমান তাহা ভঙ্গ করা সাধ্য কি—ৰূপসীর সাধ্য কি —সে দাম্পত্য প্রণয়ৰন্ধন শিথিল করে। সে পবিত্র প্রণয়ভাবের পরমাণু পরিমাণ অংশ ৰিনষ্ট করাও রূপসীর সাধ্য নহে । তবে একমাত্র উপায় দৌলতননেসাকে কোন কৌশলে জগৎসংসার হইতে সরাইতে পারিলে আশাবুক্ষে সুফল ফলিবার কথঞ্চিত পরিমাণ আশা জন্মে। তাহা না পারিলে আর অাশা নাই ! এতদিন পরিশ্রম করিয়াও যখন কৃতকাৰ্য্য হইতে পারে নাই। সে প্রণয়বন্ধন সমুলে বিচ্ছিন্ন করা দূরে থাকুক, সামান্তভাবে বিচ্ছিন্ন করিতেও সাধ্য হয় নাই, তখন ঐ লোজাপথই রূপসীর মনোরথ সিদ্ধির সহজ উপায় । এই সিদ্ধান্তই মনে মনে জাটিয়া আসরে নামিয়াছেন । সাহায্য জুটিয়াছে। অর্থের অসাধ্য কি আছে, অতুগত এবং ভালৰাসার লোকই যে গোগনে গোপনে এই সাংঘাতিক কার্য্যে প্রবৃত্ত