পাতা:মীর মশাররফ হোসেন রচনাসংগ্রহ প্রথম খণ্ড.djvu/২৮৯

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

ՀԵ e মীর মশাররফ হোসেন রচনাসংগ্ৰহ ব্যবহার, ল্যাম্প ইত্যাদি বিলাতী আলোর চলন, বাঙ্গালীর ঘরে হয় নাই। সেজ, মোমবাতি, বৈঠকী নারিকেলতৈলের বাতিই চলতি । তাহাই জলিতেছে! বড় একটি বালিশ (গের্দা) ফরাসের উপর পডিয়া আছে। রূপসী কতক্ষণ এদিকওদিক চাহিয়া বালিশে ঠেসদিয়া গম্ভীরভাবে বসিলেন। কিন্তু কোনপ্রকার শব্দ হইলেই সেইদিকে লক্ষ্য কবেন। কান পাতিয়া কি যেন শুনিতে থাকেন। ভাবে বোধ হইতেছে যেন কাহার প্রতীক্ষায় আছেন । কথা মিথ্যা নহে—প্ৰতীক্ষাষ আছেন। ঐ শুতুন মুখে কি বলিতেছেন । ক্ষণকাল গম্ভীর ভাব, মধ্যে মধ্যে চকিত ভাৰ, কাহার ৪ আগমন প্রতীক্ষ ভাব । কি বলিতেছেন শুমন । কৈ এতকথা—এতকিবে—এত মাথাছোয়া, কৈ সকলি মিছে ? এমন নির্জন, এমন সুযোগ সহজে পাওয়া যায় না। আর কি করিব । এমন সুযোগ সমযেও ৰখন আসিল না তখন আর কি করিব । সময়, সুযোগ, অবসর, স্থান এই চারটিই স্ত্রীলোকের সর্বনাশের মূল ! রক্ষার মূল । এই কথা কহিয়া একটি দীর্ঘনিশ্বাস ত্যাগ করিয়া পা ছড়াইয়া বালিশে একটু বেশী পরিমাণ ঠেসদিবা বৈঠকখানাঘরের, পাশের একটি দ্বারে এক ধ্যান একমনে চাহিয। বহিলেন । কতক্ষণ পরেই তাহার ভাববদল হইল। আন্তরিক চিস্তারভাবে মুখে ধে মলিনতাটুকু দেখা দিয়াছিল, তাহা যেন হঠাৎ সরিয়া গেল। মন সুখী না হইলে চক্ষু হাসিবে কেন ? মুখে হাসিরআভা দেখা দিবে কেন ? পাংশুবর্ণ মুখে, রক্তেরআভা খেলা করিবে কেন ? অবশ্রাই কারণ আছে । বোধ হয় আশাপূর্ণ। যাহার অসিবার কথা— ষাহার জন্য এতব্যস্ত, এতচিন্তা, বোধহয় তাহারই আগমন ? উঠিয়া বসিয়া হাততুলিয়া ইঙ্গিতে ডাকিতে লাগিলেন। সে যেন ঘরের মধ্যে আসিতেও নারাজ। তাহাতেই স্বর্ণরজতজড়িত দক্ষিণহস্ত উত্তোলন ও কব-সঞ্চালন—শেষে শয্যাত্যাগ। শষ্যাত্যাগ কবিয়া উঠিতেই—উঠিলেন না। বালিশ ছাডিয়া একটু আগে সরিয়া বসিলেন । কারণ ষে ঘবে আসিতে নারাজ ছিল, সে রাজি হইয়। আসিতেছে। পার্শ্বেবদ্বাবে উপস্থিত। গ্রীমূৰ্ত্তি দুইএকপায়ে ঘরে প্রবেশ করিল। রূপসী তাড়াতাডি যাইয়া দ্বার বন্ধ করিলেন ! ফিরিয়া আসিতেই স্ত্রীমূৰ্ত্তির অঞ্চল ধরিয়া ফরাসের নিকট টানিয়া আনিলেন। স্ত্রীমূৰ্ত্তিটি বাড়িরলোক, বয়সও বেশী—দৌলতননেসার পরিচারিক দুগতার মাত,