পাতা:মীর মশাররফ হোসেন রচনাসংগ্রহ প্রথম খণ্ড.djvu/২৯

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

“? о মীর মশাররফ হোসেন রচনাসংগ্ৰহ রজনী প্রভাত হইল। প্রভাতে কমলবন প্রফুল্প হইতে লাগিল। কুমুদিনী কাস্ত-বিরহে মলিনী হইয়া সলিলে ডুবিল । ওদিকে স্বমস্ত সরোবরতীরে মনে মনে চিন্তা করিলেন, এই শুভ অবসর উপস্থিত, এই সময সন্ন্যাসীর বেশ ধারণ করিয়া প্রিয়বন্ধুর উদ্ধারের উপায় করা কৰ্ত্তব্য । ইহা স্থির করিয়া একমনে ঈশ্ববের উপাসনা করিতে লাগিলেন। তপস্বিদত্ত বৰ্বপ্রভাবে জগদীশ্বরপ্রসাদে তৎক্ষণাৎ তাহাব তেজঃপুঞ্জ সন্ন্যাসীর রূপ আবিভূতি হইল। জটা, বহুল, শ্মশ্র, জপমালা, কম গুলু প্রভৃতি যোগিযোগা আভরণ সমস্ত, যেন শূন্য হইতে উপহাব দিলেন । যোগিরূপী স্বমস্ত নবীনবেশে সরোবরসোপানে যোগীসনে উপবেশন কবিয়া মুদিতনয়নে ধ্যান করিতে লাগিলেন । এদিকে রাজসভাপণ্ডিতগণ বাজনিয়োগাত্নসাবে অতিসত্বরে সরোবরতীরে উপনীত হইলেন । গমনমাত্রেই ধ্যানোপবিষ্ট যোগিববের সহিত সাক্ষাৎ হইল। তাহারা সবিস্ময়লোচনে সন্ন্যাসীরে নিরীক্ষণ করিয়া করযোড়ে তাহার সম্মুখে দ গুযিমান হইলেন । মায়ারূপী সন্ন্যাসী মায়াধ্যানভঙ্গে নয়ন উন্মীলন করিয়া স্বাগত প্রশ্নদ্বারা তাহাদিশকে জিজ্ঞাসা করিলেন, কে তোমবা ? কি নিমিত্ত, কি অভিলাষে কৃতাঞ্জলিপুটে আমার নিকট দ গুীয়মান আছ ? পণ্ডিতেরা একবাক্য হইয়| কহিলেন, প্রভো ! আমাদের অন্তরের বাক্য কি আপনার অস্তরে অবিদিত আছে ? এই নগরস্থ মহারাজ অসীম বিপদসাগরে নিপতিত হইয়াছেন, আপনি অনুগ্রহ প্রকাশ করিয়া একবার বাজবাটতে পদার্পণ করিলেই রাজপুরী পবিত্র হয় এবং মহারাজ ও বিপদমুক্ত হন। সন্ন্যাসিরূপী স্বমস্ত উত্তর করিলেন, আমি এরূপ ক্ষমতাবান নহি যে, তোমাদের রাজাকে ঐ ভয়ঙ্কর বিপদসাগর হইতে উদ্ধার করিতে পারি। এদিকে ভূপতি সন্ন্যাসীর আগমনবার্তা শ্রবণমাত্র স্বয়ং সরোবরতীরে গমন করিয়া সন্ন্যাসীর নিকটে করযোড়ে কাতরস্বরে বলিলেন, ভগবন্‌ ! আমার অপরাধ মার্জন করুন। আমি যৎপরোনাস্তি বিপদগ্ৰস্ত হইয় আপনার চরণে স্মরণ লইয়াছি। সন্ন্যাসী মহারাজের কাতরতা ও দীনতা দর্শনে কিঞ্চিৎ কুক্ষস্বরে কহিলেন, রাজন্‌ ! তোমার দুহিতাই ইহার মুলকারণ । সেই পাপীয়সীর পাপেই এরূপ ঘটনা হইয়াছে। সেই দুষ্টার ছলনায় কতশত রাজপুত্র কারাগারে বন্দী হইয়াছেন। রাজা পুনরায় কাতরতা প্রকাশ করাতে সন্ন্যাসী তৎসমভিব্যাহারে রাজভবনে গমন করিলেন। রাজা নিজেই স্বর্ণময় সিংহাসন আনয়নপূর্বক সন্ন্যাসীকে উপবেশন