পাতা:মীর মশাররফ হোসেন রচনাসংগ্রহ প্রথম খণ্ড.djvu/৩০

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

রত্নবর্তী ૨ છે কবিতে দিলেন । সভাস্থ সভাগণ সন্ন্যাসীকে অৰ্দ্ধচন্দ্রবৎ বেষ্টন করিয়া দাড়াইলেন। ক্ষণকাল পরে সন্ন্যাসী রাজাকে বলিলেন, মহারাজ ! কত দেশেব কত যুবরাজ তোমার কন্যার পাণিগ্রহণ-আশায় আগমন করিয়া তাহার মোহিনী মায়াপাশে বদ্ধ হইয়। কারাগারে কষ্টভোগ করিতেছেন, তাহদের কত অর্থ অপহরণ করিয়াছ, এ কি সামান্ত পাপ ! প্রথমতঃ ঐ সকল অবরুদ্ধ রাজপুত্রকে মুক্ত করিয়া তাহদের অর্থের দ্বিগুণ দান কর, তাহার পর অন্য উপায় হইবে। নতুবা যাবজ্জীবন এই ঘোরতর বিপদায়িতে দম্বীভূত হইতে হইবে। রাজা সন্ন্যাসীর বাক্য শিরোধার্যা করিয়৷ তৎক্ষণাৎ তাহাই করিতে স্বীকৃত হইলেন । সন্ন্যাসীব সম্মুখেই রাজ। কারাগারস্তু যুবরাজগণের নামধাম পরিচয় দিয়া তঁহাদের স্ব স্ব অর্থের দ্বিগুণ প্রদান করিয়া বিদায় করিতে লাগিলেন। অবশেষে সেই রাজপুত্র স্তকমাব উপস্থিত হইলে বাজা কহিলেন, প্রভো ! ইনিই কেবল ছয় দিবস কস্তার মনোবাঞ্ছা পূর্ণ করিয়া একদিবস অক্ষম হওয়াতে কারাগারে নীত হইয়াছিলেন। স্বমস্ত প্রিয়তম বন্ধুর দুরবস্থা দর্শনে অত্যন্ত কাতর হইলেন। নরপতিকে কহিলেন, মহাবাজ ! তবে এই রাজপুত্রকে বিদায় করিবেন না । ইহার দ্বারা কোন বিশেষ কাৰ্য্য সম্পাদন কবিতে হইবে । সন্ন্যাসীর বাক্য অলঙ্খনীয়, সুতরাং মহারাজ তাহাকে বিদায় করিলেন না । তখন মুকুমার মনে মনে ভাবিতে লাগিলেন যে, হায় ! আমি বন্ধুবাক্যবিরোধী হইয়া এত কষ্ট সহ করিলাম, তথাপি সে আশা ফলবতী হইল না । বে অদৃষ্ট ! অন্যান্য রাজপুত্ৰগণ উহাদের অর্থের দ্বিগুণ লইয়া স্বদেশে গমন কবিলেন, আমি এমনি হতভাগ্য যে কারাগার হইতেও মৃক্তি পাইলাম না । মহারাজ সন্ন্যাসী-সমীপে উপস্থিত হইয়া কহিলেন, গুরুদেব ! আপনার আদেশানুসারে রাজপুত্রগণকে বিদায় করা হইয়াছে। কেবল যুবরাজ স্বকুমার এই উপস্থিত আছেন। সন্ন্যাসী বলিলেন, প্রথমতঃ রাজান্তঃপুরের গ্রহশাস্তি হউক, তাহার পর সুকুমারের প্রতি যাহা কৰ্ত্তব্য তাহ করা যাইবেক । রাজ। সন্ন্যাসীসমভিব্যাহারে অন্তঃপুরে গমন করিলেন। স্বমস্ত প্রথমতঃ পুতবারি-প্রভাবে মহিষীকে মানবী করিলেন। রাজা এবং অমাত্যবর্গ সন্ন্যাসীর এই আশ্চর্য্য ক্ষমতা দর্শনে এককালে বিস্ময়াপন্ন হইয়া রহিলেন । সন্ন্যাসী ক্রমে ক্রমে সমস্ত বানরীকে মানৰী করিলেন, কিন্তু রাজকন্ত রত্নবর্তী বানরীই বহিলেন। রাজা গলবস্ত্র হইয়া বলিলেন, প্ৰভো! সকলেই রক্ষা পাইল, কিন্তু কি দোষে কষ্ঠাটি