পাতা:মীর মশাররফ হোসেন রচনাসংগ্রহ প্রথম খণ্ড.djvu/৩০৫

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

ミなど。 মীর মশাররফ হোসেন রচনাসংগ্ৰহ সী গোলামের প্রশংসা শতমুখে কবিতেছে। বুদ্ধিবিবেচনায় দুশ বুহিবা দিতেছে। কেনী আপন জেদ বজায় রাখিতে দিন দিন ক্ষতিগ্রস্ত হইতেছেন । যাহার ঘৃণাবোধ আছে, সে টাকার মায়া বোঝে না। যে রোগী, সেও টাকার মায়া করে না । যে লাজুক সেও টাকা রাখিতে জানে না । সংসারে যে সত্যবাদী এবং পর-দুঃখে কাতর, তাহার হাতেও টাকা থাকিতে পারে না। কেনী সত্যবাদী না হউক, লাজুক না হউক, দয়াল না হউক, রাগ আছে, ঘৃণাও আছে । লজ্জা যে একেবারেই নাই তাহীও নহে। কাজেই মজুত টাকা ক্রমেই হাতছাড়া হইতে লাগিল । আবার বাতাস উল্টা করিয়া বহাইবেন, আবার প্রজাকে শাসনদণ্ডে পেষণ করিবেন, এই দুশ্চিন্তাতেই সৰ্ব্বদা অর্থের শ্রাদ্ধ করিতেছেন । কিন্তু কিছুতেই কিছু হইতেছে ন । দিন দিন ভাণ্ডার খালি হইতেছে । কিছুদিন পরেই কথা ছড়াইয়া পড়িল যে, কেনী ঋণী । কলিকতা কোম্পানীব হোসে অনেক টাকা ঋণী ! প্রজার নামে খাজনার ডিক্রি হইযাছে, আদায নাই। নিজ আবাদে নীল-বুনানি হইতেছে, আয়ের নামও নাই, ব্যয়ের চতুর্থাংশের একাংশ ঘরে আসিতেছে না। মনিবের ঋণদায়ের কথা অধীন চাকবগণ ও জানিতে পাবিলেত স্বভাবত ভক্তির হ্রাস হয, বিশ্বাসেও বাধা জন্মে। মুখে প্রকাশ না হউক মনে মনে নানারূপ সন্দেহের কারণ হইয়া উঠে । অধীন বেতনভোগ আমলা সামান্য চাকর পর্য্যন্ত আপন আপন পাওনা কড়ায়ক্রস্তিতে বুঝিয়া লইতে প্রস্তুত হয় । ঋণদায়, মহাদায় ! যে সংসারে ঋণপাপ প্রবেশ করিয়াছে সে-সংসারের কল্যাণ আশা আর নাই। তবে পুণ্যের জোর বেশী থাকিলে পাপ কাটিয়া যাইয়া আবার ভাল সময়ের মুখ দেখা—সে সকলের ভাগ্যে ঘটে না। ঘর-কন্ন বিষয়-সম্পত্তির বিসর্জনেরই স্থপ্রশস্ত পথ ঋণদায় । কেনীর ভাগ্যে তাহাই ঘটিল। লাখে লাখে টাকা কোন পথে কোথায় উড়িয়া যাইতে লাগিল, কেহ চক্ষেও দেখিল না । আসিবার সময় অনেকেই দেখে, কিন্তু যাইবার সময়, কোন পথে সরিয়া যায়, বহু অন্বেষণেও সে পথের সন্ধান হয় না। অর্থ-চিস্তার স্থায় মহাচিস্ত জগতে আর কিছুই নাই । অতিবিচক্ষণ পণ্ডিত সে চিন্তায় বিহ্বল —মহাজ্ঞানী হতজ্ঞান। মহাবলশালী মহাবীর ম্রিয়মাণ। বুদ্ধির বিপৰ্য্যয় দেখিলে, আত্মবিস্মৃতির লক্ষণ বুঝিলে সৰ্ব্বদা অন্যমনস্কের ভাব থকিলে যাহা থাকিৰাৰ তাহাও থাকে না। কেহ রাখেও না। যে যে পথে হুবিধা পায় দুহাতে লুটিতে থাকে। দায়ীকের হঠাৎ অধঃপতনের অর্থই অর্থচিন্তা ও দুশ্চিতা—