পাতা:মীর মশাররফ হোসেন রচনাসংগ্রহ প্রথম খণ্ড.djvu/৩০৬

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

উদাসীন পথিকের মনের কথ। ২১৭ কেনী পীড়িত হইলেন । মলত্যাগদ্বারের কিঞ্চিৎ উৰ্দ্ধে, পুরুষ-শরীরের কিঞ্চিৎ নিম্নে অতিকোমল স্থানে বৃহৎ একটি স্ফোটক হইয় তাহাকে ধরাশায়ী করিল। তিনি বাধ্য হইয়া চিকিৎসার্থে কলিকাতায় গমন করিলেন । মিসেস কেনী কুঠিতেই বহিলেন । স্বামীর দুববস্থা হইলে স্ত্রীর মনেও যে কিছু না হয় তাহা সহে । কেহ মনেব কথা মনেই বাখে, কেহ উদাসীন পথিকের ন্যায় মনের কথা ব্যক্ত করিয়া ফেলে। হায় রে জগৎ । যদিচ কেনী ঋণী, কিন্তু তাহার স্থাবরঅস্থাবর সম্পতি পূর্বেও যাহা ছিল, এখনও তাহাই আছে, নাই কেবল টাকা । সোনারূপাব অলঙ্কবি তাহার আলমারপোর। পাঠক ! ভুলিয়াছেন ? না মনে আছে ? ঐসকল অলঙ্কাব কি কেনী নিজে প্রস্তুত কবাইয়াছিলেন ? তাহা নহে— মনে হয কি ? ঐসকল সেই অলঙ্কবি নিবীহ কৃষক-প্রজার পরিবারের ব্যবহার্ষ্য অলঙ্কার—লুটের মাল । মিসেস কেন অনেক সরাইলেন। আমলাগণও হক না হক খবচ লিখিয়া আপন আপন জমাখরচ দুৰ্বস্ত করিলেন। সে সকল খাজানার ডিক্রি প্রজার বিরুদ্ধে করিয়াছিলেন, প্রজার নিকট কিছু কিছু সেলামী লইয়া কতক চাপা দিলেন, কতক তামাদী কবিলেন, কতক বাডি চুরি, বাসা চুরিব ভান করিয়া, কেহ আচ্ছ একহাত মাবিয়া আপন জিনিসপত্র সরাইয়া বাসায় আগুন জালিয়া দিলেন । ছারপোক-মশার বংশ একেবারে শেষ হইল। আর যাহা পুড়িবাব পুডিয়া ছাই হইয়া গেল। অৰ্দ্ধ-পোডা কুডি পচিশ বস্তা বাকী খাজনার ফয়সালা সাধাবণকে দেখাইয়া একবারেই শেষ করিয়া ফেলা হইল । কেনী পীড়িত, এখনও জীবিত । তাহাতেই এই দশা । আমলা, নেগাহবান, কাৰ্য্যকারক, বিষয়সম্পত্তি, দালানকোঠা সকলি আছে । শবীরের অৰ্দ্ধাংশ যে স্বী তিনিও বাচিযা আছেন, তত্ৰাচ এই দশা । জগতের কা গুই এইরূপ । কেনী আরোগ্য হইলেন । ভালমতে আরোগ্য হইয়া কুঠিতে আসিলেন । আবার কাজকৰ্ম্ম চলিতে লাগিল। কিন্তু ঋণের ভাগ ক্রমেই বেশী হইতে চলিল । নিৰ্ব্বাণোন্মুখ প্রদীপের ন্যায় শেষদীপ্তি দেখাইয়া চির নির্বাণোন্মুখ রূপ ধারণ করিল। স্রোতস্বতীর খরতর গতি আর ঘটনাস্ত্রোতেব অবিশ্রান্ত গতি রোধ করিতে কাহারই সাধ্য নাই। ঈশ্বরের নিয়োজিত কর্য্যে বিপৰ্য্যয় ঘটাইতেও কাহারও ক্ষমতা নাই। কেনী আবার পীড়িত হইলেন । জননেন্দ্রিয়ের নিম্নে বেস্থানে