পাতা:মীর মশাররফ হোসেন রচনাসংগ্রহ প্রথম খণ্ড.djvu/৩৩

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

૨8 মীর মশাররফ হোসেন রচনাসংগ্ৰহ বিস্ময়াকুল মনে দ্রুতপদে রানীকে সংবাদ দিলেন । রানী সেই ব্ল্যাপার দর্শনের অপেক্ষ না রাখিয়াই শয়নগৃহে গিয়া রাজাকে কহিলেন, মহারাজ ! এই অদ্ভূত বার্তা শ্রবণ করুন। সন্ন্যাসীকে বাসরগ্রহে রাখিয়াছেন বলিয়। কন্যাগণ কেহই তথায় যান নাই। জামাতা, রত্ববতী, আর সেই সন্ন্যাসী তিনজনেই বাসরে আছেন, ইতিমধ্যে সন্ন্যাসী যুবারূপ ধারণ করিয়াছেন। জামাতা তাহাকে আলিঙ্গন করিয়া ক্ৰন্দন করিতেছেন। রাজা এই আশ্চর্যা ও অবিশ্বাস্ত বাক্য শ্রবণে অতি ব্যস্ত হইয়া বাসরগুহাভিমুখে চলিলেন । ক্ষুদ্র দ্বাব দিয়া দেখিলেন, সন্ন্যাসী নাই, একটি দিবা পুরুষের সহিত জামাতার কথোপকথন হইতেছে, বৃত্ববতী পাশ্বে বসিয়া আছেন। রাজা রত্বরতীকে দ্বার খুলিতে বলিলেন। বাজার স্বব শুনিয়া সুকুমার আপনিষ্ট দ্বার খুলিয়া দিলেন। রাজা গৃহাভ্যস্তবে প্রবেশ করিয়াই, “সন্ন্যাসী কোথায় ? এই স্বপুরুষ যুরাপুরুষ কে ?” এই প্রশ্ন করিলেন। স্বমস্ত নতশিরে উত্তর কবিলেন, মহারাজ ! আমিই সেই সন্ন্যাসী। রাজা ইহা শ্রবণ করিয়া চমৎকৃত হইলেন । কহিলেন, এই আশ্চৰ্য্য ঘটনার আদ্যোপাস্ত বৃত্তান্ত শ্রবণ করিতে অত্যস্ত কৌতুহল জন্মিতেছে! স্বমস্ত প্রথমে তাহাদিগের বাল্যসখ্য, উভয় বন্ধুতে তর্ক, মীমাংসার্থ দেশভ্রমণে বহির্গমন এবং কপিরূপী তপস্বীর সহিত সাক্ষাৎ ও বরপ্রাপ্তি অবধি পরস্পর বিচ্ছেদ ও রত্নপুরে আগমন, পরিশেষে এই বিবাহ পর্য্যন্ত সমস্ত বৃত্তান্ত বর্ণন করিলেন। রাজা অভিনিবেশপূৰ্ব্বক এতদূৰ্বত্তান্ত শ্রবণ করিয়া স্বমস্তের বিদ্যা-বুদ্ধির ভূয়সী প্রশংসা করিলেন। কহিলেন: বৎস স্নমস্ত ! তুমি বলিয়াছিলে ধনাপেক্ষ বিদ্যা শ্রেষ্ঠ, তাহ যথার্থ, তোমরাই তাহার প্রত্যক্ষ প্রমাণ দেখাইলে । এইরূপ নান কথাপ্রসঙ্গে কিয়ৎক্ষণ তথায় থাকিয়া রাজা শযনগৃহে গমন করিলেন। বজনী প্রভাত হইলে রাজা সভাসীন হইয়া আপন মন্ত্রিকন্যার সহিত সুমন্তের পরিণয়সম্বন্ধ স্থির করিলেন । শুভদিনে শুভক্ষণে বিবাহ হইল। সুকুমার ও স্বমস্ত কিছুদিন শ্বশুরালযে বাস কবিয়া সন্ত্ৰীক স্বদেশে গমন করিলেন।