পাতা:মীর মশাররফ হোসেন রচনাসংগ্রহ প্রথম খণ্ড.djvu/৩৭৮

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

গো-জীবন ○やり。 বলা হইয়াছে. দ্বিতীয় বার বলা নিম্প্রয়োজন। পাঠক ! অন্ত বিষয়ে দৃষ্টাস্তস্বরূপ দেখাইতেছি, ভ্রাতা মোসলমানগণ ! বলুন তো মোসলমান হইয়৷ ধুতি চাদর ব্যবহার করা কোন হাদিসে আছে ? একি দেশ প্রথা নহে? গুড়গুড়ি কি পেচাওনলেব বাহাব দিয। সুগন্ধিযুক্ত তামাকের ধুমপান করা কোন বিধি সঙ্গত ? লাল রঙ্গের নাগবা জুতঃ কি কাল রঙ্গের চডাতোলা জুতা ব্যবহার করা এটা কি ? বাষ্পীয় শকটে, বাষ্পীয় পোতে গমনাগমন করার বিষয় কি শাস্ত্রে উল্লেখ আছে ? টেলিগ্রামে, টেলিফোনে সংবাদ আদান-প্রদান করা কি শাস্ত্রের বাহিরের কার্য্য নয? বিলাতি দেশলাই বুঝি কোন মোসলমান ভ্রাতা ব্যবহার করেন না ? কি পবিতাপ ! হায । হায় কি দুঃখের কথা । মানচেষ্টারেব বস্ত্র দ্বারা লজ্জা নিবারণ করিতে হইবে একথা কি শাস্ত্রে লিখা আছে ? কেবল শাস্ত্রে গোজাতির কোন প্রকার উপকারেব কথা লিখা নাই বলিয়৷ কি তাহার উপকারিতার বিষয় স্বীকার কবিব না ? যাক পুরুষ, পুরুষানুক্রমে ভোগ কবিতেছি, চক্ষে যাহা দেখিতেছি, অন্তবের শিবায শিবায় যাহার প্রমাণ পাইতেছি, প্রতি শোণিত বিন্দুতে যাহাব সাক্ষা দিতেছে, তত্ৰাচ বলিব যে গোজাতির বিষয় শাস্ত্রে কোন গুণেব কথা লিখা নাই । গরুব গুণ কেন স্বীকার করিব ? কেন গোবধে ক্ষাস্ত হইব ? আমাদের পক্ষে, গে, বৃষ, ছাগ, মেষ, হবিণ, সকলি সমান। কি ঘূণা। কি লজ্জা ! আমি শাস্ত্র বহিভূত কোন কার্যা করিতে বলিব না। —বলিতে সাধ্যও নাই । শাস্ত্র রক্ষা করিয়া উপকারীজনের প্রত্যুপকার কবা ময়ূন্যেরই কাৰ্য্য। পশুরাই প্রত্যুপকাব করিতে সহজে স্বীকার হয় না। হিংস্ৰক জন্তুরাই প্রত্যুপকারেব পক্ষপাতী ! ময়ূন্যে কেন প্রতুাপকারের প্রতিদ্বন্দ্বী হইবে ? নরাধম কসাইগণই গোহত্যা করে । “কাচ্ছবি” শব্দ হইতে কসাই হইয়াছে, কাচ্ছাব শব্দের ভাবাৰ্থ ব্যবসাদার। বেশ তো, কসাইগণ ব্যবসা করে, শান্ত্রসঙ্গত কাৰ্য্য করে, তবে সে কসাই নামে অভিহিত হয় কেন ? সে কথা আমাদের মনে আঘাত লাগে কেন ? আজ হইতে মনের ভাব ফিরাইতে হইল। কারণ কসাই শাস্ত্র বহির্ভূত কাৰ্য্য করে না, ব্যবসাদায়-ভাল কথা, বড় মিষ্টি সম্ভাষণ। পাঠক ! মোসলমান কবিগণ পারস্য ভাষায় কসাইয়ের বর্ণনা কিরূপ করিয়াছেন ? যে গোহত্যা করে তাহাকেই কি কসাই বলিয়াছেন ? তাহা নহে। যাহার অস্তরে দয়া, মায়া, মমতা, কিছুই নাই, পর দুঃখে যাহার হৃদয় কাতর নহে, ব্যথা বোধ না করে, ૨ 8