পাতা:মীর মশাররফ হোসেন রচনাসংগ্রহ প্রথম খণ্ড.djvu/৩৮৩

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

" ኧ8 মীর মশাররফ হোসেন রচনাসংগ্ৰহ সহকাবে একটুকু চিন্তা কবি। দেখিলে সহজেই বোঝা যায়, তাহর অভিপ্রেত ভাব অতি সহজেই জনগেfচব হই । তিনিই দেশভেদে খাদ্যের প্রভেদ কবিয়াছেন । প্রচুর পরিমাণ খাদ্য আমাদিগকে অর্পণ করিয়াছেন । তাহার নিয়োজিত খাদ্যই আমাদিগের রুচিকর ও তৃপ্তিকর । গোমাংস খাওয়াই যদি আমাদেৰ কর্তব্য হইত, তবে এত স্বস্বাদু ফলমূল শস্যাদি দ্বারা বঙ্গক্ষেত্র পরিপূরিত করিতেন না । --নদী জলেও এত মৎস্য জন্মিত না । যে দেশে যাহ। প্রয়োজন, সে দেশের গষ্ট করুণাময় ভগবান তাহ অপৰ্য্যাপ্তরূপে দান করিয়াছেন ; বঙ্গে থাকিয়া কি ইউরোপীনের খাদ্যের অনুকরণ করা উচিত ? না আরববাসীদিগের আহাবের দৃষ্টান্ত দেখাইয়া উদর পূর্ণ করা বিধেয় ? দেশভেদে আহালেব প্রভেদ—ইহ। অবশু স্বীকার্য্য ! কলি--অর্থাৎ সময় । বঙ্গবাসী মোসলমানদিগেব এমন দুঃসময কি উপস্থিত হওয়াছে যে, গোমাংস না খাইলে তার জীবন বক্ষ হয় না ? এমন কোন সময় কি উপস্থিত হইয়াছে যে, অনাহাবে মবি মবি হইয, না খ{ঠতে পাবিয! প্রাণপাখি দেহপিনজর হইতে উডি উড়ি হঠয’, গে মাংসে শুধু গোমাংসে প্রাণ রক্ষ হইয়াছে, জীবনীশক্তির শক্তি বৃদ্ধি হয়।ছে ? দুভিক্ষ উপস্থিত হতলে আমরা কিসের অভাব মনে কবি ? কোন জিনিসে অভাবজনিত আমাদের কষ্ট বোধহয় ? অন্নের—ন। গোমাংসের ? ববং কোন কোন সময দুই একজন অর্থশালী ভোগবিলাসী মহোদয়ের মুখে শুনা যায় যে, এবারে জলে মাছ নাই । ডাঙ্গায় গোমাংস নাই,—একথা বলিয়া কোন মৌলবী সাহেব কৰে আক্ষেপ কবিয়াছেন ? কোন ভ্রাতা গোমাংসের অভাবে দুঃখ প্রকাশ করে ? রাজদ্বারে সাহায্য প্রার্থন করেন ? ইহাতেও কি বলিব যে গোমাংস আমাদের খাদ্য, এ সময়ে, এ দুঃসময়ে গোমাংসই জীবনের জীবন, শবীর পোষক, এবং দুভিক্ষ নিবারক ? 轉 এখন পাত্র হইয়া বড়ই বিপদে পড়িলাম। খাই গঙ্গা পদ্মা, যমুনা, ব্ৰহ্মপুত্ৰ, পচা বিল কি পাতকুয়ার জল ! বায়ু সেবন করি ঝাড জঙ্গলের, পাট ক্ষেত্রের, না হয় ধানের মাঠের । থাকি খডো ঘরে । চলাফেরা করি সেঁতসেঁতে ভিজেমাটি, জল কাদার উপরে । শরীরের গঠন ও আয়তন তেমনি । অস্তি, পেশীশক্তিও তথৈবচ। সাহসের তো কথাই নাই। পাকযন্ত্রের অগ্নির তেজ, ধারণা ও ক্ষমতার কথা আরকি বলিব। চাল ভাল করিয়া সিদ্ধ ন হইলেই মারা গিয়াছি।