পাতা:মীর মশাররফ হোসেন রচনাসংগ্রহ প্রথম খণ্ড.djvu/৩৮৬

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

গো-জীবন oግማ রূপে পরিবদ্ধিত করিতেছে ; বাজাধিরাজ মহারাজের বনজিত রন্ধনশালা হইতে, দরিদ্রের পর্ণ কুটিবস্তু ক্ষদ্র পাকপত্র পর্য্যস্ত বিবিধ প্রকারে, গো দুগ্ধ প্রবেশ করিতেছে । ইহার নিকট জাতিভেদ পরাস্ত, ঘৃণ! অ-রুচি লজ্জিত, হিন্দু মোসলমানের নিকট সমভাবে সমাদৃত। সম্প্রদায় প্রভেদে ভারতে খাদ্যাদির বিশেষ বিভেদ আছে, কিন্তু দুগ্ধের নিকট বিধানকতার হস্ত সঙ্কোচিত, মস্তিষ্ক অবনত । যে হিন্দু গোমাংসের কথা শুনিলে কর্ণে হাত দিতেছেন, তিনি গোরসে মত্ত । আবার যে মোসলমান গোমাংস জন্য জিহ্বার জল ফোটায ফেলিতেছেন, তিনিও গোরসে লালায়িত। দয়াময ভগবান সাব অংশ, তৈল অংশ, মধুর অংশ এবং জল অংশ—এই কযেক অংশ দ্বাবা দুগ্ধের সমষ্টি করিয়। অপাব লীলা দেখাইয়াছেন । শুধু মাংস আহাব কবিয বঁচি থাকিতে পাবে না এমন কোন খাদ্য নাই যে সেই একমাত্র খাদ্য গলাধ কবিয়া শরাব লক্ষ হইলে পাবে, প্রাণ বাচাইতে পারে। সে গুণ, সে ক্ষমতা কেবল একমাত্র দুগ্ধেব ! পবিত্রতার গুণই বা কত বলিব, —কাফেবের হস্ত হইতে মৌলবী গ্রহণ কবিতেছেন, চ গুলেব হস্ত হইতে ব্রাহ্মণে লইতেছেন । কাহার ও মনে দ্বিধা নাই, কোনরূপ ঘৃণার কথা মুখে নাই । গোমাংস যেমন, সম্প্রদায় বিভেদে ঘৃণাহ, তেমনি গোদুগ্ধ মল্লযু মাত্রেই আদরের } ভারতের একপ্রাস্ত হইতে অন্তপ্রান্ত যাও, খাদ্যাখাদ্যের বিভিন্নতা অর্থাৎ গ্রহণ বর্জন এবং রুচি-অরুচি, সকলি দেখিতে পাইবে, কিন্তু দুগ্ধ সম্বন্ধে সেই এককথা, সেই একমত, সেই একভাব । কেহই দুগ্ধের বিরোধী নহে, কোন সম্প্রদাষেবই পরিত্যাজ্য নহে । স্বাস্থে অস্বাস্থ্যে, শীত গ্রীষ্মে, সৰ্ব্বকালে সেই স্বগীস মৃধা রুচিকব ও তৃপ্তিকর। যে সকল সাহেবগণ গোকুল নিমূল করিতে স্বতাঙ্কু ছুরিক হস্তে দগুiযমান হইয়াছেন, তাহারাও দুগ্ধকে পবিত্র খাদ্য মনে কবিয়া সাদরে গ্রহণ করিতেছেন, অস্তরাত্মা শীতল হইতেছে । শাস্ত্রেব দায়দিয়া দুগ্ধের বাটটি পর্যাস্ত ধুইয়া উদরে গলা হইতেছে। শাস্তে আছে - সে সময় “হজবত নুবনৰী মোহাম্মদ মুস্তফা” সেই অনন্তকৌশলীৰ অনস্তলীলায় মর্ত হইতে সপ্ত তল বিমান অতিবাহিত কবিয পবিত্র অনন্তধামে দয়াময়ের দরবালে স্ব-শরীরে বিঘোর নিশীথ সময়ে “বোরাক আবোহণে” (স্বগীয় বাহন ) অতি মুহুর্তে নীত হইয়াছিলেন—বলিতেও অল্প শিহরিয়া উঠে —সে মহাপবিত্র পূণ্যধামেও দুগ্ধেরই প্রাধান্তের কথা শুনা যায়। প্রিয় প্রণয়ীর অভ্যর্থনা হেতু পাত্র পূর্ণ দুগ্ধই সম্মুখে উপস্থিত হইয়াছিল। আশ্চর্য্য ! স্বর্গেমত্ত্বে সমান আদর ? ধন্ত ভগবানেথ লীলা ও মহিমা !