পাতা:মীর মশাররফ হোসেন রচনাসংগ্রহ প্রথম খণ্ড.djvu/৫৬

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

জমীদার-দপণ 8 * আবু—দোহাই খ সাহেবরা, আমায় বে-ইজ্জত করবেন না, আমি কোমর-খোলাই টাকা দিচ্ছি । জামা—টীকা দিচ্ছি তো কত বারই বললি, টাকা আন না । আবু—আমি নিতান্ত গরীব। ( কোচার মূড়া হইতে এক টাকা ও কাছার মুড়া হইতে এক টাকা, এই টাকা লইয়া ) আপনাদের পান খাবার জন্য এই দুটি টাকা । জামা— মোল্লার হাতে সজোরে আঘাত করিয়া টাকা ভূমিতে নিক্ষেপ ) বেটী কি টাকা দেনে-আলা ! আমরা ভিক্ষে কবতে এসেছি ? দুটো টাক নেব ? চল ( ঘাড়ে হাত দিয়া পাক দে গুন এবং পৃষ্ঠে চার-পাচট। মুষ্ট্যাঘাত ) ৷ আবু—দোহাই পেয়াদা সাহেব, আমি তাই দিচ্ছি, তাই দিচ্ছি। { নেপথ্যে ( অস্তবাল হইতে স্ত্রীলোকের হাতে তিনটি টাকা ) ন্যাও আর কি করবে, যা কপালে ছিল তাই হলো । ] আবু—( হাত বাড়াইয়া ক্ষণকাল পরে ) নেন, এই পাঁচটি টাকাই নেন। জামা—( টাকা হাতে করিয়া উপবেশন ও সঙ্গীগণের প্রতি ) বসে হে বসে } আবু—( তামাক সাজিতে সাজিতে ) আমি তো কোন অপরাধ করিনি ; তবে জুলুম কেন ? ( কিঞ্চিং ভাবিয়া ) সকলই আমার নসিবের দোষ, আমি কোন কথার মধ্যে যাইনে, কোন হের-ফের বুঝিনে, ( টিকায় ফু দেওন ) কেউ চড়া কথা বললে কি দু’ঘা মাল্পেও পিঠে সই। দোষ কল্পেই সাজ। হয়, তবে যখন সাচ্চা আছি—তখন—সকলি নসিবের— ডাবা হুকায় কলিকা চড়াইয়া দান ) একালে যে যত সোজা থাকে তার পাছে কাঠি দিতে কেউ রেয়াত করে না । আমি ভাল জানিনে, মন্দ জানিনে, আমার উপর পাঁচজন প্যায়দা ! বাবা ! কাকের উপর কামানের আওয়াজ ! ( গাত্ৰোখান ও যোড় করিয়া পশ্চিমদিকে ফিরিয়া ) এ আল্লা, তুই জানিস আমি কোন মন্দ করিনি, হাকিমের বা কি করেছি যে হক না-হক মাচ্ছেন ? মাটির হাকিমের কুনজরে পলে কি আর বঁাচা যায় ? কথায় বলে, “রাজা বাদী, উত্তর নাদি !” আপনারা বসুন, আমি চাদরখানা নিয়ে আসি ।