যুবক—আপনার কথা আমি খুব মানি। তবুও যদি পারেন, একটু দেখবেন। এইটুকু আমার অনুরোধ। তবে আসি, নমস্কার।
প্রকাশ—আরে এই যে এসো এসো ভায়ারা! হ্যাঁ, তারপর তোমাদের সেই ব্যাপারটা গড়ালো কত দূর? বলি, দেশ উদ্ধারের আর দেরী কত?
বিপিন—এ দেশের উদ্ধার অসম্ভব। দেশের শতকরা ৯৯টি লোকই চলছে বেচালে, সম্পূর্ণ বিপথে। ঘোর কলি ভাই, ঘোর কলি। এ দেশের উদ্ধার করতে হলে সর্ব্বাগ্রে কি প্রয়োজন জান? ভাষা, ভাষার সংস্কার। ভাষা মনের ভাব প্রকাশ করে। জাতি যে দিন সুন্দর করে তার মনের ভাব প্রকাশ করতে সমর্থ হবে, সেই দিনই হবে তার উত্থান। তা যাক, তোমার কারবারের অবস্থা তো ভালোই মনে হচ্ছে, নতুন লোক রাখবে বলে কাগজে বিজ্ঞাপন দিয়েছ দেখ্লাম।
প্রকাশ—তোমাদের শুভেচ্ছায় এক রকম ভালই বলতে হবে বৈ কি। জান ত সামান্য পুঁজি নিয়ে একাই এ কারবারটা আরম্ভ করেছিলাম—
বিপিন—এই তো তোমাদের দোষ। স্পষ্ট করে কোনো কথা বলবার সাহস বা ক্ষমতা তোমাদের নেই। এ হচ্ছে ভাষাকে জবাই করা। ‘একরকম’, ‘প্রায়’—এই সব হেঁয়ালী ভরা অসম্পূর্ণ বাক্য ব্যবহার করে বলেই ত বাঙালী আজ এত দুর্ব্বল মেরুদণ্ডহীন জাতি হয়ে দাঁড়িয়েছে। ভাষার চাই দৃঢ়তা, চাই স্পষ্টতা—না হলে ভাষায় জোর আসবে কোন্ চুলো থেকে? জাতিও গোল্লায় যাবে নাতো কোথায় যাবে?