প্রকাশ—তা’ হলে আমাকে কি বলতে হবে?
বিপিন—যদি ইংরাজীতে বলতে চাও তবে তোমার কারবারটা 50 p.c. ভাল, না 75 p.c. ভাল, তাই হিসেব করে বলবে; আর বাংলায় বলতে হলে বলবে—ছয় আনা ভাল, দশ আনা ভাল, বারো আনা ভাল—না ষোল আনাই ভাল। তবেই ত ভাবটা স্পষ্ট হবে।
প্রকাশ—সাবাস্ ভাই সাবাস্! বলিহারী তোমার উর্ব্বর মস্তিষ্কের, তোমার বুদ্ধির তারিফ না করে থাকতে পারছি না ভাই! তা যাক, চা টা যে জুড়িয়ে গেল। গলাটা ভিজিয়ে নাও। নইলে ভাষা গলা দিয়ে স্পষ্ট হয়ে বেরুবে কি করে?
দিলীপ—(চা পান করিতে করিতে) চায়ের স্বাদটা ত বড় সুন্দর হয়েছে! যাই-ই বল প্রকাশ ভায়া, যে দিন দেশের লোক এই বৈষ্ণব কবিদের বুঝতে পারবে, সেই দিনই আমাদের সাহিত্য-সাধনা সম্পূর্ণ হবে। দেশেরও এক নূতন সভ্যতা গড়ে উঠবে। জাতির জাগরণ সেই দিনই আসবে। “শুধু বৈকুণ্ঠের তরে বৈষ্ণবের গান” নয়—
“বৈষ্ণব কবির গাঁথা প্রেম-উপহার
চলিয়াছে নিশিদিন কত ভারে ভার
বৈকুণ্ঠের পথে। মধ্যপথে নর-নারী
অক্ষয় সে সুধারাশি করি কাড়াকাড়ি
লইতেছে আপনার প্রিয় গৃহতরে
যথা সাধ্য ষে যাহার।”
রবীন্দ্রনাথ তাঁর প্রতিভা-দীপ্ত কল্পনায় বিদ্যাপতি আর চণ্ডীদাসকে কি ভাবে উপলব্ধি করেছেন একবার দেখ।