পাতা:মুর্শিদাবাদের ইতিহাস-প্রথম খণ্ড.djvu/৫৪৪

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

অষ্টম অধ্যায়। 8West বিবেচনায় অতি সত্বর মসজীদাদির নিৰ্ম্মাণ শেষ করিতে হইবে বলিয়া মোরাদ ফরাসের লোকেরা কতকগুলি দেবমন্দির ভূমিসাৎ করিয়াছিল। কেবল দেবমন্দির বলিয়া নহে, অনেক গৃহস্থের বাটাও যে ভগ্নস্তপে পরিণত হয়, তাহাও মুসলমান ঐতিহাসিকগণের বিবরণ হইতে জানা যায়। যে সমস্ত দেবমন্দির হিন্দুদিগের তীর্থ বা তীর্থস্বরূপ ছিল ও যাহা বাদসাহগণের ফাৰ্ম্মানানুসারে চিরস্থায়ী বলিয়া গণ্য হইত, মোরাদ এমন কি নবাব মুর্শিদকুলী খাও তাঁহাদের প্রতি হস্তক্ষেপ করিতে পারিতেন না। সেই জন্য কিরীটেশ্বরী প্রভৃতি মন্দিরের কোনই অনিষ্ট হয় নাই। যাহাদের কোন দলিলাদি ছিলনা ও সাধারণ লোকে ইচ্ছাপূৰ্ব্বক যে সমস্ত মন্দির নিৰ্ম্মাণ করিয়াছিল, সম্ভবতঃ তাহাদেরই ধ্বংস হইয়া থাকিবে। দ্বার্ড কর্ণওয়ালিসের লাখরাজ আইনের সময় যে সমস্ত দেবোত্তর ভূমির কোন রূপ সনন্দ ছিলনা, তাহ মালভুক্ত হইয়াছিল)মুতরাং মোরাদ ফরাসের স্থায় অশিক্ষিত লোক যে সেই রূপ কারণে কতকগুলি মন্দির ভূমিসাৎ করিবে, ইহা অসম্ভব বলিয়া বোধ হয় না। মুসলমান ঐতিহাসিকগণের বর্ণনা অতিরঞ্জিত হইলেও, মোরাদ ফরাসের অত্যাচার অস্বীকার করার উপায় নাই। কারণ, নবাব সুজা উদ্দীন তাহার অত্যাচারের অনুসন্ধান করিয়া মোরাদের প্রতি প্রাণদণ্ডের আদেশ প্রদান কয়িয়াছিলেন। যে ব্যক্তি রাজাজ্ঞায় প্রাণদণ্ডে দণ্ডিত হইতে পারে, তাহার অত্যাচার যে অমূলক এরূপ ব্যক্ত করা অতি সাহসের কথা বলিয়াই বোধ হয়। নবাব মুর্শিদকুলী খাঁ দ্যায়পর নবাব হইলেও অল্প দিনের মধ্যেমসজীদনিৰ্ম্মাণ হওয়া আবশুকবোধে মোরাদের অত্যাচারের প্রতি সম্ভবতঃ লক্ষ্য করেন নাই, এবং মোরাদও নবাবের নিকট হইতে পূৰ্ব্বে ঐ মৰ্ম্মে আদেশ লইয়াছিল বলিয়া ঐতিহাসিকগণ উল্লেখ করিয়া থাকেন।