পাতা:মুর্শিদাবাদ কাহিনী.djvu/২৭৪

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।
২৬৮
মুর্শিদাবাদ-কাহিনী


বা অন্য লোক, কিংবা তাহাদের কোন আত্মীয় কোন জমিদারী বা ফারম ইজারা লইতে পরিবে না; এইরূপ করিলে সেই কর্মচারীকে পদচ্যুত হইতে হইবে॥

 এই নিয়ম বিধিবদ্ধ করিয়া কোম্পানীর কর্তৃপক্ষগণ এইরূপ মন্তব্য প্রকাশ করিয়াছিলেন যে, কোম্পানীর কর্মচারিগণ যদি ইজারাদারদিগকে সাহায্য করেন, তাহা হইলে, কেহ তাঁহাদের সহিত প্রতিদ্বন্দ্বিতায় অগ্রসর হইবে না। কোম্পানী ইচ্ছা করেন না যে, তাহদের স্বীয় কর্মচারিগণের সহিত কোনরূপ বন্দোবস্ত হয়। কোম্পানীর কর্মচারীরা এইরূপ ইজারদার হইলে, প্রজাগণ আপনাদিগের রক্ষার জন্য কাহাদের আশ্রয় গ্রহণ করিবে? সুতরাং তাহার কোম্পানীর কর্মচারীদিগকে ভূয়োভূয়ঃ এই বিধি-অনুসারে কার্য করিতে আদেশ করেন। কিন্তু দুঃখের বিষয়, গবর্নর জেনারেলই তাহা লঙ্ঘন করিয়া, আপনার বেনিয়ানের অত্যন্ত সুবিধা করিয়া দেন এবং তজ্জন্য জমিদার ও প্রজাদিগের উপর যদিও অত্যাচার করিতে হইত, তাহাতেও তিনি পশ্চাৎপদ হইতেন না। নিয়মে স্পষ্টতঃ কলেক্টরগণ ও তাঁহাদের কর্মচারীরা নিষিদ্ধ হইয়াছিলেন বলিয়া, হেস্টিংস চতুরতাপূর্বক স্বীয় বেনিয়ানের সুবিধার উপায় করিয়া দেন। এক সময়ে কান্তবাবু তাঁহার বিশেষ উপকার করেন, এমন কি প্রাণরক্ষা করিয়াছিলেন বলিতে হইবে—সেইজন্য, তিনি তাঁহার প্রত্যুপকার করিতে কৃতসকল্প হইয়াছিলেন। কিন্তু দস্যুদিগের মত পরস্বাপহরণ করিয়া প্রত্যুপকারের এই উপায়, কদাচ ন্যায়মতে সমর্থন করিতে পারা যায় না। সদুপায়ে সেই প্রত্যুপকার করিলে উপকর্তা ও উপকৃত উভয়েরই পুণ্যলাভ হয়, অন্যথা ইহাতে উভয়েরই প্রত্যবায় আছে।

 হেস্টিংস বলপূর্বক কান্তবাবুকে যে সমস্ত জমিদারী প্রদান করেন, তন্মধ্যে বাহারবন্দ পরগণাই সর্বপ্রধান। বাহারবন্দ রঙ্গপুর জেলার অন্তর্গত, একটি বিস্তৃত ও আয়কর জমিদারী বাহারবন্দ আজিও কাশীমবাজার রাজবংশের অধীন আছে এবং ইহা তাহাদের সর্বাপেক্ষা প্রধান ও লাভকর জমিদারী। বাহারবন্দ পরগণা পূর্বে রানী সত্যবতীর জমিদারীর অন্তর্গত ছিল; তিনি ধর্মোপার্জন মানসে সংসার পরিত্যাগ

- - - - - - - -

  ৮ “That no peshcar, banyan, or other servant, of whatever denomination, of the Collector, or relation, or dependant of any such servant, be allowed to farm lands, nor directly or indirectly to hold a concern in any farm, nor to be security for any farmer; and if it shall appear that the Collector shall have countenanced, approved, or connived at a breach of this regulation, he shall stand ipso facto dismissed from his collectorship.” (Mill's History of India, Vol. III, p. 646. Also Beveridge's History of India, Vol. II) এই নিয়মে যদিও কলেক্টর ও তাহার কর্মচারিগণের প্রতি নিষেধাজ্ঞা প্রদত্ত হইয়াছিল, তথাপি তাহার Commentary বা ব্যাখ্যায় কলেক্টরের স্থলাভিষিক্ত কোম্পানীর সকল কর্মচারীকেই বুঝাইবে বলিয়া লিখিত হয়।

 ৯ বাহারবন্দের বিস্তৃত বিবরণ পরিশিষ্টে দ্রষ্টব্য।