২০ লক্ষ টাকা ব্যয় হয়, এবং তাহার বাৎসরিক ক্রিয়ায় প্রতিবৎসর এক লক্ষ টাকা ব্যয় হইত।
মাতৃশ্রাদ্ধব্যতীত গঙ্গাগোবিন্দ আরও দুইটি সমারোহময় কার্য সম্পন্ন করেন; একটি তাহার পৌত্র লালাবাবুর অন্নপ্রাশন, দ্বিতীয় পুরাণের কথা-প্রদান। পৌত্রের অন্নপ্রাশনে তিনি স্বর্ণপত্র ক্ষোদিত করিয়া ব্রাহ্মণদিগকে নিমন্ত্রণ করিয়াছিলেন। সোনামুখীর প্রসিদ্ধ পুরাণকথক গদাধর শিরোমণি গঙ্গাগোবিন্দের পুরাণ-কথায় ব্রতী ছিলেন। গঙ্গাগোবিন্দ সন্তুষ্ট হইয়া, তাহাকে লক্ষ টাকা প্রদান করেন। | গঙ্গাগোবিন্দ নবদ্বীপ প্রভৃতি স্থানের পণ্ডিতদিগকে বৃত্তি প্রদান করিয়া উৎসাহিত করিতেন, এবং তাহাদিগের গৃহাদির সংস্কার ও ছাত্রগণের আহারপরিচ্ছদের ব্যয়ের জন্য অজস্র অর্থ প্রদান করিতেন!
পণ্ডিত প্রতিপালন ব্যতীত দেবসেবায় তাহার যথেষ্ট ভক্তি ছিল। তিনি নদীয়ার নিকট রামচন্দ্রপুরে শ্রীগোবিন্দ, গোপীনাথ, কৃষ্ণজী ও মদনমোহনজীর প্রতিষ্ঠা করিয়া, তাহাদের সেবার জন্য অনেক দেবোত্তর সম্পত্তি নির্দেশ করিয়া যান। কান্দীতে তাহার রাধাকান্ত নিজ নামে রাধাবল্লভমূতি প্রতিষ্ঠা করিয়াছিলেন। তাহার মৃত্যুর পরে ভ্রাতা গঙ্গাগোবিন্দ রাধাবল্লভের সেবায় নিযুক্ত হন। গঙ্গাগোবিন্দ রাধাবল্লভের বাটী নির্মাণ করিয়া, অভ্যাগতগণের বাসের উত্তম সুবন্দোবস্ত করেন। রাধাবল্লভের নিত্যভোগ অতি সমারোহপূর্বক সম্পন্ন হইয়া থাকে। যদিও এক্ষণে তাহার কিছু কিছু হাস হইয়াছে, তথাপি কালীর রাধাবল্লভের যেরূপ সেবার বন্দোবস্ত আছে, মুর্শিদাবাদের কোন দেবভবনে সেরূপ বন্দোবস্ত নাই।[১] রাধাবল্লভের রাসযাত্রা মহাসমারোহে সম্পন্ন হয়। সেই সময়ে, কান্দীতে উৎসব দেখিবার জন্য নানাস্থান হইতে বহুলোকের সমাগম হইয়া থাকে।
গঙ্গাগোবিন্দ যদিও অসদুপায়ে অর্থোপার্জন করিয়াছিলেন, তথাপি তৎসমুদায়
- ↑ রাধাবল্লভের সেবার সম্বন্ধে বাবু ভোলানাথ চন্দ্র এইরূপ লিখিয়াছেনঃ "Of all the shrines, the one at Kandi is maintained with the greatest liberality. The God here seems to live in the style of the Great Mogul. His muspud and pillows are of the best velvet and damask richly embroidered. Before him are placed gold and silver salvers, cups, tumblers, pawn-dans, and jugs all of various size and pattern. He is fed every morning with fifty kinds of curries, and ten kinds of pudding. His breakfast over, gold hookas are brought to him to smoke the most aromatic tobacco. He then retires to his noonday siesta. In the afternoon he tiffs and lunches, and at night sups the choicest and richest viands with new names in the vocabulary of Hindoo confectionary. The daily expense at this shrine is said to be 500 rupees, inclusive of alms and charity to the poor.” (Travels of a Hindoo, Vol. I, p. 66)