ইলয়াস বাতাবর্তে [১] স্বর্গে নীত হন। স্বর্গে নীত হইবার পূর্বে তিনি স্বীয় পরিচ্ছদের দ্বারা জননদীতে আঘাত করিলে, নদীর জল বিভক্ত হইয়া যায় এবং তিনি তাহার শিষ্য ইলাইসা নদীগর্ভে প্রবেশ করেন। এই সময়ে অগ্নিময় রথ উপস্থিত হওয়ায় ইয়াস, ইলাইসা হইতে পৃথক হইয়া পড়েন, পরে বাতাবর্তে স্বর্গে নীত হন।[২] সম্ভবতঃ জর্ডনগর্ভে প্রবেশকালে অগ্নিময় রথের আগমন স্মরণ। করিয়া এইরূপ আলোকোৎসব হইয়া থাকিবে। গ্রীক ও লাটিন চার্চে ২০এ জুলাই ইলায়াসের স্বর্গারোহণের দিন বলিয়া উৎসব হয়।[৩] কিন্তু ব্যার পর্ব ভাদ্রমাসের শেষ বৃহস্পতিবারে হইয়া থাকে।
যতদিন হইতে মুর্শিদাবাদের প্রতিষ্ঠা, ততদিন হইতে এই আলোকোৎসব চলিয়া আসিতেছে। বাবু ভোলানাথচ ভ্রমকমে লিখিয়াছেন যে, সিরাজউদ্দৌলা ইহার প্রবর্তন করেন।[৪] কিন্তু প্রচলিত ইতিহাসে নবাব মুর্শিদকুলী খাঁর সময় হইতে ইহার অনুষ্ঠানের উল্লেখ দেখিতে পাওয়া যায়। যে সময়ে ঢাকায় রাজধানী ছিল, সে সময়েও তথায় ব্যার পর্ব সম্পন্ন হইত। নবাব মকরম খা ঁঢাকায় ইহার প্রবর্তন করেন বলিয়া কথিত আছে।[৫] পূর্বে ইহা মহাসমারোহে সম্পন্ন হইত, এক্ষণে। ক্লমেই মন্দীভূত হইয়া আসিতেছে। বাস্তবিক আলোকোৎসব এক্ষণে মুর্শিদাবাদের পক্ষে উপযোগী নহে। চিরান্ধকারে অবস্থান করিবার জন্য যাহার নিয়তি, আলোকোৎসব তাহার পক্ষে কখনও শোভা পায় না। যাহার পূর্ব-গৌরব না জানি। বিস্মৃতির কত গভীর গর্ভে বিলীন হইয়া রহিয়াছে, তাহার আবার উৎসব কি? বিশেষতঃ আলোকোৎসব। নিবিড় অন্ধকাররাশির বিভীষিকাময়ী ক্রীড়াই তাহার একমাত্র উপযোগী।