পাতা:মুর্শিদাবাদ কাহিনী.djvu/৩৯৯

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।
৩৯৩
পরিশিষ্ট
৩৯৩

শুন ভাই লড়ায়ের কথা,
শুন ভাই লড়ায়ের কথা আইল কলিকাতার চিঠি।
দিবানিশি বহরমপুরের গড়ে,[১]
সাত সাহেবে, মুখােমুখি বিজির বিজির করে।

জবরের খবর শুনি তুরসুনি কোম্পানী কহিছে,
তয়ের কর দেখি গােরা কত ফিরিঙ্গি আছে।
 সামনে শুক্তি গেড়ে তুল্লে তেড়ে বাণের মুলুক দিয়ে
কাকলে নদী আসছে যেন হীরে শত হয়ে
বাঙ্গলা মুখে করে।
বাঙ্গলা মুখে করে পানসী ভরে দেখতে লাগে ভাল,
সাজিল তেলেঙ্গা গােরা কুতি লালে লাল।
মােকামপুর পলাশীতে।
মােকামপুর পলাশীতে সিপুই সাতে সঙ্গে তুড়ুকসােয়ার,
আগুন পানী নাহি মানি করে মার মার
পড়িল মামুদ তকী,
পড়িল মামুদ তকী দোনের আঁখি ছুড়ছে মনের আশ
তা দেখে সয়ান খাঁ খাতে কাটে ঘাস।
বাবুজান পেটের চাকর।
বাবুজান পেটের চাকর তেরা নফর হামকো কাহে মারাে,
হাম বাঙ্গলা ছোড় দেয়া হ্যায় তােমলােক আমল কর।
সাহেবেরই দোহাই ফিরুক,
সাহেবের দোহাই ফিরুক এমন কালে তাতীর বাড়ি বাড়ি,
খাশিয়ালীর বাচ্চা যেন বইলে ঘানি ধরি।
ফিরিঙ্গি আলা বাঁশি।
ফিরিঙ্গি আলা বাশি পইলে আসি তেলেঙ্গার হল জল,
দাড়ী ফেল্লে মােচ ফেল্লে গলায় দিলে মালা।
তারা বৈরাগী হলাে।
তারা বৈরাগী হল কতক গেল নিজ নিজ দেশ,
স্ন্যায়সা কা হামারা বাবু চিকে হল শেষ।

 উপরে সংগৃহীত কবিতা পাঠে বােধ হয় যেন মামুদ তকী (মহম্মদ তকী খা) কিছু কাপুরুষতা অবলম্বন করিয়াছিলেন। কিন্তু নিম্নের সংগৃহীত কবিতায় তাহার উল্লেখ নাই, এবং তাহাতে সয়ান খাঁ নামে এক ব্যক্তির দাঁতে ঘাস কাটার কথাই দেখা যায়। ইতিহাস। মহম্মদ তকী খার পক্ষ। মুতাক্ষরীন প্রভৃতি গ্রন্থে মহম্মদ তকী খার অসমসাহসিকতা ও প্রভুভক্তির যথেষ্ট পরিচয় পাওয়া গিয়া থাকে। দুঃখের বিষয় বঙ্কিমচন্দ্রের চন্দ্রশেখর মহম্মদ তকীকে ভিন্নরূপে চিত্রিত করিয়াছেন।

  1. বহরমপুরের গড় বা ক্যান্টনমেন্ট মীর কাসেমের সময় হয় নাই। ১৭৬৩ খ্রীস্টাব্দে ইংরাজদিগের সহিত মীর কাসেমের যুদ্ধ হয়। ১৭৬৫ হইতে ১৭৬৭ পর্বত বহরমপুর ক্যান্টনমেন্টের নির্মাণ হয়। ইহাতে বােধ হইতেছে কবিতাটি বহরমপুর ক্যান্টনমেন্ট নিমিত হইবার পরে রচিত হইয়াছে।