পাতা:মৃণালিনী-বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়.djvu/১০৩

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

বিনা সূতার হার పాt অদ্য শাস্তুশীলের সহিত কথোপকথনের পর, পশুপতির সেই সকল কথা মনে পড়িল । মনে ভাবিলেন, “এত কালের পর বুঝি এ অন্ধকার পুরী আলো হইল—যদি জগদম্ব। অনুকূল হয়েন, তবে মনোরম এ অন্ধকার ঘুচাইবে।” এইরূপ ভাবিতে ভাবিতে পশুপতি, শয়নের পূর্বে অষ্টভূজাকে নিয়মিত প্ৰণামবন্দনাদির জন্য দেবীমন্দিরে প্রবেশ করিলেন। প্রবেশ করিয়া দেখিলেন যে, তথায় মনোরমা বসিয়া আছে । পশুপতি কহিলেন, “মনোরমা, কখন আসিলে ?” মনোরম পুজাবশিষ্ট পুষ্পগুলি লইয়া বিনামূত্রে মালা গাঁথিতেছিল। কথার কোন উত্তর দিল না। পশুপতি কহিলেন, “আমার সঙ্গে কথা কও। যতক্ষণ তুমি থাক, ততক্ষণ সকল যন্ত্রণা বিস্মৃত হই।” মনোরম মুখ তুলিয়া চাহিয়া দেখিল। পশুপতির মুখপ্রতি চাহিয়া রহিল, ক্ষণেক পরে কহিল, “আমি তোমাকে কি বলিতে আসিয়াছিলাম, কিন্তু তাহা আমার মনে হইতেছে না।” পশুপতি কহিলেন, “তুমি মনে কর। আমি অপেক্ষা করিতেছি।” পশুপতি বসিয়া রহিলেন, মনোরম মালা গাঁথিতে লাগিল । অনেকক্ষণ পরে পশুপতি কহিলেন, “আমারও কিছু বলিবার আছে, মনোযোগ দিয়া শুন । আমি এ বয়স পর্য্যন্ত কেবল বিদ্যা উপার্জন করিয়াছি—বিষয়ালোচনা করিয়াছি, অর্থোপার্জন করিয়াছি। সংসারধৰ্ম্ম করি নাই। যাহাতে অমুরাগ, তাহাই করিয়াছি, দারপরিগ্রহে অমুরাগ নাই, এজহু তাহা করি নাই। কিন্তু যে পৰ্য্যস্ত তুমি আমার নয়নপথে আসিয়াছ, সেই পৰ্য্যন্ত মনোরমা লাভ আমার একমাত্র ধ্যান হইয়াছে। সেই লাভের জন্য এই নিদারুণ ব্রতে প্রবৃত্ত হইয়াছি। যদি জগদীশ্বরী অনুগ্রহ করেন, তবে স্থই চারি দিনের মধ্যে রাজ্যলাভ করিব এবং তোমাকে বিবাহ করিব । ইহাতে তুমি বিধবা বলিয়া যে বিস্তু, শাস্ত্রীয় প্রমাণের দ্বারা আমি তাহার খণ্ডন করিতে পারিব। কিন্তু তাহাতে দ্বিতীয় বিয় এই যে, তুমি কুলীনকম্বা, জনাৰ্দ্দন শৰ্ম্ম কুলীনশ্রেষ্ঠ, আমি শ্রোত্রিয় ।” মনোরম এ সকল কথায় কর্ণপাত করিতেছিল কি না সন্দেহ। পশুপতি দেখিলেন যে, মনোরম চিত্ত হারাইয়াছে। পশুপতি, সরল অবিকৃত বালিকা মনোরমাৰুে ভালবাসিডেন-প্রৌঢ়া তীক্ষ্ণবুদ্ধিশালিনী মনোরমাকে ভয় করিতেন। কিন্তু জড়