পাতা:মৃণালিনী-বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়.djvu/১৩৫

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

अग्लिभरुटिल ১২৭ চিতারোহণ করিতেছে—তিনি আসিয়া একবার তাহার সহিত সাক্ষাৎ করিয়া যাউন, র্তাহার নিকটে ইহলোকে মনোরমার এই মাত্র ভিক্ষা।” - হেমচঞ্জ যখন ব্রাহ্মণমুখে শুনিলেন যে, মনোরম পশুপতির পত্নীপরিচয়ে তাহার অসুস্থত হইতেছেন, তখন তিনি কিছুই বুঝিতে পারিলেন না। দুর্গাদাসের সমভিব্যাহারে গঙ্গাতীরে আসিলেন । তথায় মনোরমার অতি মলিন, উন্মাদিনী মূৰ্ত্তি, র্তাহার স্থিরগম্ভীর, এখনও অনিন্দ্যমুন্দর মুখকান্তি দেখিয় তাহার চক্ষুর জল আপনি বহিতে লাগিল। তিনি বলিলেন, “মনোরম ৷ ভগিনী । এ কি এ ”ি তখন মনোরমা, জ্যোৎস্নাপ্রদীপ্ত সরোবরতুল্য স্থির মূৰ্ত্তিতে মৃগম্ভীরস্বরে কহিলেন, “ভাই, যে জঙ্ক আমার জীবন, তাহ আজি চরম সীমা প্রাপ্ত হইয়াছে। আজ আমি আমার স্বামীর সঙ্গে গমন করিব।” মনোরম সংক্ষেপে অন্যের শ্রবণাতীত স্বরে হেমচন্দ্রের নিকট পূৰ্ব্বকথার পরিচয় দিয়া বলিলেন, “আমার স্বামী অপরিমিত ধন সঞ্চয় করিয়া রাখিয়া গিয়াছেন। আমি এক্ষণে সে ধনের অধিকারিণী। আমি তাহা তোমাকে দান করিতেছি। তুমি তাহা গ্রহণ করিও । নচেৎ পাপিষ্ঠ যবনে তাহ ভোগ করিবে। তাহার অল্পভাগ ব্যয় করিয়া জনাৰ্দ্দন শৰ্ম্মাকে কাশীধামে স্থাপন করিবে। জনাৰ্দ্দনকে অধিক ধন দিও না। তাহা হইলে যবনে কাড়িয়া লইবে। আমার দাহের পর, তুমি আমার স্বামীর গৃহে গিয়া অর্থের সন্ধান করিও। আমি যে স্থান বলিয়া দিতেখ, সেই স্থান খুড়িলেই তাহ পাইবে। আমি ভিন্ন সে স্থান আর কেহই জানে না।” এই বলিয়া মনোরম যথা অর্থ আছে, তাহ বলিয়া भिद्रव्ञन । - তখন মনোরম আবার হেমচন্দ্রের নিকট বিদায় হইলেন। জনাৰ্দ্দনকে ও র্তাহার পত্নীকে উদ্দেশে প্রণাম করিয়া হেমচন্দ্রের দ্বারা তাহাদিগের নিকট কত স্নেহসূচক কথা বলিয়া পাঠাইলেন । পরে ব্রাহ্মণের মনোরমাকে যথাশাস্ত্র এই ভীষণ ভ্রতে ব্ৰতী করাইলেন । এবং শাস্ত্রীয় আচারাত্ত্বে, মনোরম ব্রাক্ষণের আনীত নূতন বস্ত্র পরিধান করিলেন। নব বস্ত্র পরিধান করিয়া, দিব্য পুষ্পমালা কণ্ঠে পরিয়া, পশুপতির প্রজ্বলিত চিতা প্রদক্ষিণপূর্বক, তত্বপরি জারোহণ করিলেন। এবং সহস্তে জাননে সেই প্রজ্বলিত হুতাশনরাশির মধ্যে উপবেশন করিয়া, নিদাসম্ভণ্ড কুসুমকলিকার স্থায় অনলতাপে প্রাণত্যাগ করিলেন।

- "