পাতা:মৃণালিনী-বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়.djvu/১৫

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

a - * আমার বিশেষ আজ্ঞা আছে যে, যত দিন মৃণালিনী তাহার গৃহে থাকিবে, তত দিন রুবাস্তরের সাক্ষাং ন পায়। হে । সাক্ষাৎ না পাই, যাহা বলিলেন, ইহাতেই আমি চরিতার্থ হইলাম। এক্ষণে গৰ্য্য করিতে হইবে অনুমতি করুন। - ম। তুমি দিল্লী গিয়া যানের মন্ত্রণ কি জানিয়া আসিয়াছ ? হে। যবনের বঙ্গবিজয়ের উদ্যোগ করিতেছে। অতি ত্বরায় বস্তৃতিয়ার খিলিজি লইয়া, গৌড়ে যাত্রা করিবে । মাধবাচার্য্যের মুখ হৰ্ষপ্রফুল্প হইল। তিনি কহিলেন, “এত দিনে বিধাতা বুঝি শের প্রতি সদয় হইলেন ।” হেমচন্দ্র একতানমনে মাধবাচার্য্যের প্রতি চাহিয়া তাহার কথার প্রতীক্ষা করিতে লেন। মাধবাচাৰ্য্য বলিতে লাগিলেন, “কয় মাস পর্য্যন্ত আমি কেবল গণনায় নিযুক্ত , গণনায় যাহ। ভবিষ্যৎ বলিয়। প্রতিপন্ন হইয়াছে, তাহ ফলিবার উপক্রম হইয়াছে।” হেম । কি প্রকার ? মা। গণিয়া দেখিলাম যে, যবনসাম্রাজ্য-ধ্বংস বঙ্গরাজ্য হইতে আরম্ভ হইবে। হে। তাহা হইতে পারে। কিন্তু কতকালেই বা তাহা হইবে ? অার কাহা

ম। তাহাও গণিয়া স্থির করিয়াছি । যখন পশ্চিমদেশীয় বণিক্‌ বঙ্গরাজ্যে fরণ করিবে, তখন যবনরাজ্য উৎসন্ন হইবেক । হে। তবে আমার জয়লাভের কোথা সম্ভাবনা ? আমি ত বণিক নহি । মা ! তুমিই বণিক। মথুরায় যখন তুমি মৃণালিনীর প্রয়াসে দীর্ঘকাল বাস ছিলে, তখন তুমি কি ছলনা করিয়া তথায় বাস করিতে ? হে। আমি তখন বণিক্‌ বলিয়া মথুরায় পরিচিত ছিলাম বটে। - ম। সুতরাং তুমিই পশ্চিমদেশীয় বণিক। গৌড়রাজ্যে গিয়া তুমি অস্ত্ৰধারণ লই যবননিপাত হইবে । তুমি আমার নিকট প্রতিশ্রুত হও যে, কাল প্রাতেই যাত্রা করিবে। যে পৰ্য্যন্ত সেখানে না যবনের সহিত যুদ্ধ কর, সে পৰ্য্যন্ত নীির সহিত সাক্ষাৎ করিবে না । হেমচন্দ্র দীর্ঘনিশ্বাস ত্যাগ করিয়া কহিলেন, “তাহাই স্বীকার করিলাম। কিন্তু । যুদ্ধ করিয়া কি করিব ?”