পাতা:মৃণালিনী-বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়.djvu/২০

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

-: * * * *

  • - *...*.*

.

  • --
  • .

স্ব। আমার বড় রাগ হইয়াছিল, বুড়ার কথায় আমার হাড় জ্বলিয়া গিয়াছিল, আর বিপংকালে লজ্জা কি ? মাধবাচাৰ্য্য আমাকে মুখরা মনে করিলেন, মৃত্ব হাসিলেন, - কহিলেন, “আমি যে তোমাকে এইরূপে হস্তগত করিব, তাহ হেমচন্দ্র জানেন না ।” আমি মনে মনে কহিলাম, তবে র্যাহার জন্য এ জীবন রাখিয়াছি, তাহার অনুমতি ব্যতীত সে জীবন ত্যাগ করিব না। মাধবাচার্য্য বলিতে লাগিলেন, “তোমাকে প্রাণত্যাগ করিতে হইবে না—কেবল আপাততঃ হেমচন্দ্রকে ত্যাগ করিতে হইবে। ইহাতে র্তাহার পরম মঙ্গল। যাহাতে তিনি রাজ্যেশ্বর হইয়া তোমাকে রাজমহিষী করিতে পারেন, তাহ। কি তোমার কৰ্ত্তব্য নহে? তোমার প্রণয়মন্ত্রে তিনি কাপুরুষ হইয়া রহিয়াছেন, তাহার সে ভাব দূর করা কি উচিত নহে?” আমি কহিলাম, “আমার সহিত সাক্ষাৎ যদি তাহার অনুচিত হয়, তবে তিনি কদাচ আমার সহিত আর সাক্ষাৎ করিবেন না।” মাধবাচাৰ্য্য বলিলেন, “বালকে ভাবিয়া থাকে, বালক ও বুড়া উভয়ের বিবেচনা শক্তি তুল্য ; কিন্তু তাহ। নহে। হেমচন্দ্রের অপেক্ষা আমাদিগের পরিণামদৰ্শিতা যে বেশী, তাহাতে সন্দেহ করিও না। আর তুমি সন্মত হও বা না হও, যাহা সঙ্কল্প করিয়াছি, তাহা করিব। আমি তোমাকে দেশান্তরে লইয়া যাইব । গৌড় দেশে অতি শাস্তস্বভাব এক ব্রাহ্মণের বাটীতে তোমাকে রাখিয়া আসিব । তিনি তোমাকে আপন কস্তার হ্যায় যত্ন করিবেন। এক বৎসর পরে আমি তোমার পিতার নিকট তোমাকে আনিয়া দিব । আর সে সময়ে হেমচন্দ্র যে অবস্থায় থাকুন, তোমার সঙ্গে তাহার বিবাহ দেওয়াইব, ইহা সত্য করিলাম।” এই কথাতেই হউক, আর অগত্যাই হউক, আমি নিস্তব্ধ হইলাম। তাহার পর এইখানে আসিয়াছি। ও কি ও সই ? তৃতীয় পরিচ্ছেদ ভিখারিণী সখীদ্বয় এই সকল কথাবাৰ্ত্ত কহিতেছিলেন, এমন সময়ে কোমলকণ্ঠনিঃস্থত মধুর সঙ্গীত র্তাহাদিগের কর্ণরন্ধে প্রবেশ করিল। * “মথুরাবাসিনি, মধুরহাসিনি, শু্যামবিলাসিনি—রে ”