+ পুন্ধ శ్రీ রাখিয়া, শয়ান রছিলেন। কিয়ৎকাল পরে, সহসা তাহার পৃষ্ঠদেশে কঠিন করম্পর্শ হইল। মুখ ফিরাইয়া দেখিলেন, সম্মুখে মাধবাচাৰ্য্য। মাধবাচাৰ্য্য কহিলেন, “বৎস! গাত্ৰোখান কর। আমি তোমার প্রতি অসন্তুষ্ট হইয়াছি—সন্তুষ্টও হইয়াছি। তুমি আমাকে দেখিয় বিস্মিতের স্তায় কেন চাহিয়৷ রহিয়াছ ?” হেমচন্দ্ৰ কহিলেন, “আপনি এখানে কোথা হইতে আসিলেন ?” মাধবাচাৰ্য্য এ কথায় কোন উত্তর না দিয়া কহিতে লাগিলেন, “তুমি এ পর্য্যম্ভ নবন্ধীপে না গিয়া পথে বিলম্ব করিতেছ—ইহাতে তোমার প্রতি অসন্তুষ্ট হইয়াছি। আর তুমি যে মৃণালিনীর সন্ধান পাইয়াও আত্মসত্য প্রতিপালনের জন্য র্তাহার সাক্ষাতের সুযোগ উপেক্ষা করিলে, এজন্য তোমার প্রতি সন্তুষ্ট হইয়াছি । তোমাকে কোন তিরস্কার করিব । না। কিন্তু এখানে তোমার আর বিলম্ব করা হইবে না। মৃণালিনীর প্রত্যুত্তরের প্রতীক্ষা করা হইবে না। বেগবান হৃদয়কে বিশ্বাস নাই। আমি আজি নবদ্বীপে যাত্রা করিব। তোমাকে আমার সঙ্গে যাইতে হইবে—নেক প্রস্তুত আছে। অস্ত্ৰ শস্ত্রাদি গৃহমধ্য হইতে লইয়। আইস । আমার সঙ্গে চল ।” হেমচন্দ্র নিশ্বাস ত্যাগ করিয়া কহিলেন, “হানি নাই—আমি আশা ভরসা বিসর্জন করিয়াছি। চলুন। কিন্তু আপনি-কামচর না অম্ভর্যাম ?” এই বলিয়া হেমচন্দ্র গৃহমধ্যে পুম প্রবেশ পূর্বক বণিকের নিকট বিদায় গ্রহণ করিলেন। এবং আপনার সম্পত্তি এক জন বাহকের স্কন্ধে দিয়া আচাৰ্য্যের অমুবৰ্ত্তী হইলেন । পঞ্চম পরিচ্ছেদ লুব্ধ মৃণালিনী বা গিরিজায় এতন্মধ্যে কেহই আত্মপ্রতিশ্রুতি বিস্মৃত হইলেন না । উভয়ে প্রহরেক রাত্রিতে হৃষীকেশের গৃহপার্থে সংমিলিত হইলেন। মৃণালিনী গিরিজায়াকে দেখিবামাত্র কহিলেন, “কই, হেমচন্দ্র কোথায় ?” গিরিজায়া কহিল, “তিনি আইসেন নাই।”
পাতা:মৃণালিনী-বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়.djvu/৩১
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।