পাতা:মৃণালিনী-বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়.djvu/৩৫

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

- ব্যোমকেশ কহিল, “মৃণালিনী অভিসারে গমন করিয়াছিল, আমি তাহাকে স্থত । করিয়াছি বলিয়া সে আমার পৃষ্ঠে দারুণ দংশন করিয়াছে।” . হৃষীকেশ পুত্রের কুরীতি কিছুই জানিতেন না। মৃণালিনীকে প্রাঙ্গণ হইতে উঠিতে দেখিয়া এ কথায় তাহার বিশ্বাস হইল। তৎকালে তিনি মৃণালিনীকে কিছুই বলিলেন না। নঃশব্দে গজগামিনীর পশ্চাৎ তাহার শয়নাগারে আসিলেন । ষষ্ঠ পরিচ্ছেদ হৃষীকেশ মৃণালিনীর সঙ্গে সঙ্গে উপহার শয়নাগারে আসিয়া হৃষীকেশ কহিলেন, “মৃণালিনি ! তামার এ কি চরিত্র ?” মৃ। আমার কি চরিত্র ? হৃ। তুমি কার মেয়ে, কি চরিত্র কিছুই জানি না, গুরুর অনুরোধে আমি তামাকে গৃহে স্থান দিয়াছি। তুমি আমার মেয়ে মণিমালিনীর সঙ্গে এক বিছানায় শাও—তোমার কুলটাকৃত্তি কেন ? মৃ । আমার কুলটাৰ্বত্তি যে বলে সে মিথ্যাবাদী। হৃষীকেশের ক্রোধে অধর কম্পিত হইল। কহিলেন, “কি পাপীয়সী । আমার অন্নে দর পূরাবি, আর আমাকে দুৰ্ব্বাক্য বলিবি ? তুই আমার গৃহ হইতে দূর হ। না হয় tধবাচার্ষ্য রাগ করিবেন, তা বলিয়া এমন কালসাপ ঘরে রাখিতে পারিব না।” মৃ। যে আজ্ঞা—কালি প্রাতে আর আমাকে দেখিতে পাইবেন না। হৃষীকেশের বোধ ছিল যে, যে কালে তাহার গৃহবহিষ্কৃত হইলেই মৃণালিনী Iাশ্রয়হীন হয়, সেকালে এমন উত্তর তাহার পক্ষে সম্ভব নহে। কিন্তু মৃণালিনী রোশ্রয়ের আশঙ্কায় কিছুমাত্র ভীত নহেন দেখিয়া মনে করিলেন যে, তিনি জারগুহে স্থান tইবার ভরসাতেই এরূপ উত্তর করিলেন । ইহাতে হৃষীকেশের কোপ আরও বৃদ্ধি হইল । গনি অধিকতর বেগে কহিলেন, “কালি প্রাতে। আজই দূর হও।” মৃ। যে আজ্ঞা । আমি সখী মণিমালিনীর নিকট বিদায় হইয়া আজই দূর ইতেছি ।