দ্বিতীয় খণ্ড প্রথম পরিচ্ছেদ গৌড়েশ্বর অতি বিস্তীর্ণ সভামণ্ডপে নবদ্বীপোজ্জলকারী রাজাধিরাজ গৌড়েশ্বর বিরাজ রিতেছেন। উচ্চ শ্বেত প্রস্তরের বেদির উপরে রত্নপ্রবালবিভূষিত সিংহাসনে, রত্নপ্রবালগুত ছত্রতলে বর্ষীয়ান রাজা বসিয়া আছেন। শিরোপরি কনককিঙ্কিণী সংবেষ্টিত বিচিত্র রুকাৰ্যখচিত শুভ্র চন্দ্ৰাতপ শোভা পাইতেছে। এক দিকে পৃথগাসনে হোমাবশেষভূষিত, অনিন্যমূৰ্ত্তি ব্রাহ্মণমণ্ডলী সভাপণ্ডিতকে পরিবেষ্টন করিয়া বসিয়া আছেন। যে সিনে, এক দিন হলায়ুধ উপবেশন করিয়াছিলেন, সে আসনে এক্ষণে এক অপরিণামদর্শী টুকার অধিষ্ঠান করিতেছিলেন। অন্ত দিকে মহামাত্য ধৰ্ম্মাধিকারকে অগ্রবর্তী করিয়া ধান রাজপুরুষের উপবেশন করিয়াছিলেন। মহাসামন্ত, মহাকুমারামাতা, প্রমাত, পরিক, দাসাপরাধিক, চেীরোদ্ধরণিক, শৌদ্ধিক, গোলিকগণ, ক্যত্রপ, প্রান্তপালের, Fাষ্ঠপালের, কাণ্ডরিকা, তদাযুক্তক, বিনিযুক্তক প্রভৃতি সকলে উপবেশন করিতেছেন। হাপ্রতীহার সশস্ত্রে সভার অসাধারণত রক্ষা করিতেছেন। স্তাবকেরা উভয় পার্শ্বে এণীবদ্ধ হইয়া দাড়াইয়া আছে। সৰ্ব্বজন হইতে পৃথগাসনে কুশাসনমাত্র গ্রহণ করিয়া ণ্ডিতবর মাধবাচার্য্য উপবেশন করিয়া আছেন। রাজসভার নিয়মিত কাৰ্য্যসকল সমাপ্ত হইলে, সভাভঙ্গের উদ্যোগ হইল। তখন ধবাচার্য্য রাজাকে সম্বোধন করিয়া কহিলেন, “মহারাজ ! ব্রাহ্মণের বাচালতা মার্জন রিবেন। আপনি রাজনীতিবিশারদ, এক্ষণে ভূমণ্ডলে যত রাজগণ আছেন সর্বাপেক্ষা ছদশী; প্রজাপালক , আপনিই আজন্ম রাজা। আপনার অবিদিত নাই যে, শক্রদমন জিার প্রধান কৰ্ম্ম। আপনি প্রবল শক্রদমনের কি উপায় করিয়াছেন ?”
পাতা:মৃণালিনী-বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়.djvu/৩৯
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।