পাতা:মৃণালিনী-বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়.djvu/৪৮

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

গিরিজায় কছিল, “আগে কি জানি।” বলিয়া গায়িতে লাগিল, - “ভাসল ভর সকাল বেল, ভাবিলাম এ জলখেলা, মধুর বহিবে বায়ু ভেসে যাব রঙ্গে । এখন—গগনে গরজে ঘন, বহে খর সমীরণ, - * - কুল ত্যজি এলাম কেন, মরিতে আতঙ্গে।" মৃণালিনী কহিল, “কূলে ফিরিয়া যাও না কেন ?” গিরিজায়৷ গায়িতে লাগিল, “মনে করি কুলে ফিরি, বাহি তরী ধীরে ধীরি কুলেতে কন্টক-তরু বেষ্টিত ভুজঙ্গে।” মৃণালিনী কহিলেন, “তবে ডুবিয়া মর না কেন ?” গিরিজায় কহিল, “মরি তাহাতে ক্ষতি নাই, কিন্তু” বলিয়া আবার গায়িল, “যাহারে কাণ্ডারী করি, সাঞ্জাইয়া দিমু তরী, সে কভু না দিল পদ তরণীর অঙ্গে ॥” মৃণালিনী কহিলেন, “গিরিজায়, এ কোন অপ্রেমিকের গান।” গি। কেন ? মৃ। আমি হইলে ভরী ডুবাই । গি । সাধ করিয়া ? মৃ। সাধ করিয়া । গি। তবে তুমি জলের ভিতর রত্ন দেখিয়াছ। চতুর্থ পরিচ্ছেদ - বাতায়নে হেমচন্দ্র কিছু দিন উপবনগৃহে বাস করিলেন। জনাৰ্দ্দনের সহিত প্রত্যহ সাক্ষাৎ হইত। কিন্তু ব্রাহ্মণের বরিতাপ্রযুক্ত ইঙ্গিতে আলাপ হইত মাত্র। মনোরমার সহিতও সৰ্ব্বদা সাক্ষাৎ হইত, মনোরম কখন তাহার সহিত উপযাচিক হইয়া কথা কহিতেন, কখন বা বাক্যব্যয় না করিয়া স্থানান্তরে চলিয়া যাইতেন । বস্তুতঃ মমোরমার প্রকৃতি