পাতা:মৃণালিনী-বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়.djvu/৫

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

১৮৬৬ খ্ৰীষ্টাব্দের মবেম্বর মাসে কপালকুণ্ডল প্রকাশিত হইবার পর সাহিত্যক্ষেত্রে ঙ্কিমচন্দ্রের প্রাধাপ্ত অবিসম্বাতিরূপে স্বীকৃত হয় ; বঙ্কিমচন্দ্র নিজের প্রতিষ্ঠাভূমি আবিষ্কার করিয়া যেন দিগ্বিজয়ের জন্য উন্মুখ হইয় উঠেন। যক্তিয়ার খিলজির নেতৃত্বে প্তদশ অশ্বারোহীর বঙ্গবিজয়ের অবিশ্বাস্ত গল্প বাঙালীর গৌরবে ও বলে আস্থাবান ঙ্কিমচন্দ্রকে বরাবর পীড়া দিত। ইতিহাসের কলঙ্ক তিনি কল্পনার জলসিঞ্চনে ক্ষালন মরিবার জন্য বদ্ধপরিকর হন । পশুপতি-চরিত্রকে আশ্রয় করিয়া তিনি সেদিনকার tাঞ্ছিত বাঙালীর পক্ষে লেখনীধারণ করেন । ‘মৃণালিনী’ উপন্যাস র্তাহার এই কলঙ্কচালন চেষ্টার ফল। - বারুইপুরে ও আলিপুরে ডেপুটি ম্যাজিস্টেট রূপে অবস্থানকালে কপালকুণ্ডলা বং মৃণালিনী রচিত ও প্রকাশিত হয় । ‘মৃণালিনী’র প্রকাশকাল ১৮৬৯ খ্ৰীষ্টাব্দের বেম্বয় মাস। শচীশচন্দ্র লিখিয়াছেন— আলিপুরে বঙ্কিমচন্দ্র দশ মাস মাত্র ছিলেন। সেই দশ মাসের [ ১৮৬৭ আগস্ট হইতে ১৮৬৮ জুন ] ভিতর তিনি মৃণালিনী লিখিয়া শেষ করিলেন। পরে ১৮৬৮ খৃষ্টান্ধের জুন মাস হইতে তিনি ছয় মাসের ছুটা লইলেন। ভূটার কিয়দংশ গৃহে থাকিয় আইন-পুস্তকপাঠে ও মৃণালিনীর পাণ্ডুলিপি-সংশোধনে প্রতিবাহিত করিলেন ; এবং অবশেষে মৃণালিনী ছাপিতে দিয়া কাশীধামে চলিয়া গেলেন। মৃণালিনী মুদ্রিত হইতে এক বৎসরের উপর সময় লাগিয়াছিল। অবকাশাস্তে বঙ্কিমচন্দ্র আলিপুরে ফিরিয়া আসিলেন, তখনও মৃণালিনী ছাপা শেষ হয় নাই। অবশেষে ১৮৬৯ খৃষ্টাব্দের নবেম্বর মাসে মৃণালিনী প্রকাশ করিয়া বঙ্কিমচন্দ্র বহরমপুরে চলিয়া গেলেন –‘বঙ্কিম-জীবনী, ৩য় সং, পৃ. ৯৭। বঙ্কিমচন্দ্র ‘মৃণালিনী'র প্রথম ও দ্বিতীয় সংস্করণের আখ্যা-পত্রে ইহাকে “ঐতিহাসিক পন্যাস” বলিয়াছিলেন। পরে অনেক বিবেচনা করিয়া তিনি “ঐতিহাসিক” বিশেষণ প্রয়োগ রহিত করেন। আসলে মৃণালিনী’র ঐতিহাসিকতা সামান্য ; সমস্ত গল্পটি তাহার ক্ষম সবল কল্পনার ফল । মৃণালিনী প্রকাশিত হইলে মনস্বী রাজেন্দ্রলাল মিত্র তাহার 'রহস্ত-সন্দর্ভে হার এক বিস্তৃত আলোচনা প্রকাশ করেন। সমসাময়িক শিক্ষিত মহলে মৃণালিনী’