পাপিষ্ঠ দিগ্বিজয়ই বা কোথায়? তাহাকে পাইলেও ত মুখ খুলিয়া বঁচি। কিন্তু দিগ্বিজয় গৃহমধ্যে প্রভুর কার্য্যে নিযুক্ত ছিল—তাহারও সাক্ষাৎ পাইলেন না। তখন অন্য পাত্রাভাবে গিরিজায়া আপনার সহিত মনে মনে কথােপকথন আরম্ভ করিলেন। সে কথােপকথন শুনিতে পাঠক মহাশয়ের কৌতূহল জন্মিয়া থাকিলে, প্রশ্নোত্তরছলে তাহা জানাইতে পারি। গিরিজায়াই প্রশ্নকর্ত্রী, গিরিজায়াই উত্তর দাত্রী।
প্র। ওলাে তুই বসিয়া কেলো?
উ। গিরিজায়া লাে।
প্র। এখানে কেন লো?
উ। মৃণালিনীর জন্যে লো।
প্র। মৃণালিনী তাের কে?
উ। কেহ না।
প্র। তবে তার জন্যে তাের এত মাথা ব্যথা কেন?
উ। আমার আর কাজ কি? বেড়িয়া বেড়িয়া কি করিব?
প্র। মৃণালিনীর জন্যে এখানে কেন?
উ। এখানে তার একটী শিকলী কাটা পাখী আছে।
প্র। পাখী ধরিয়া নিয়ে যাবি না কি?
উ। শিকলী কেটে থাকে ত ধরিয়া কি করিব? ধরিবই বা কিরূপে?
প্র। তবে বসিয়া কেন?
উ। দেখি শিকল কেটেছে কি না।
প্র। কেটেছে না কেটেছে, জেনে কি হইবে?
উ। পাখীটীর জন্যে মৃণালিনী প্রতি রাত্রে কত লুকিয়ে লুকিয়ে কাঁদে—আজি না জানি কতই কাঁদবে যদি ভাল সম্বাদ লইয়া যাই তবে অনেক রক্ষা হবে।