প্র। আর যদি শিকলী কেটে থাকে?
উ। মৃণালিনীকে বলিব, যে পাখী হাত ছাড়া হয়েছে—রাধাকৃষ্ণ নাম শুনিবে ত আবার বনের পাখী ধরিয়া আন। পড়া পাখীর আশা ছাড়। পিঁজরা খালি রাখিওনা।
প্র। মর ছুঁড়ি ভিখারির মেয়ে? তুই আপনার মনের মত কথা বলিলি! মৃণালিনী যদি রাগ করিয়া পিঁজরা ভাঙ্গিয়া ফেলে?
উ। ঠিক্ বলেছিস্ সই! তা সে পারে। বলা হবে না।
প্র। তবে এখানে বসিয়া রোদ্রে পুড়িয়া মরিস কেন?
উ। বড় মাতা ধরিয়াছে ভাই। এই যে ছুঁড়ী ঘরের ভিতর বসিয়া আছে—এ ছুঁড়ী বােবা–নহিলে এখনও কথা কয় কেন? মেয়ে মানুষের মুখ—এখনও বন্ধ?
ক্ষণেক পরে গিরিজায়ার মনস্কাম সিদ্ধ হইল। হেমচন্দ্রের নিদ্রাভঙ্গ হইল। তখন মনােরমা তাঁহাকে জিজ্ঞাসা করিলেন।
“কেমন তােমার ঘুম হইয়াছে?”
হ। “বেশ ঘুম হইয়াছে।”
ম। “এখন বল কি প্রকারে আঘাত পাইলে?”
তখন হেমচন্দ্র রাত্রের ঘটনা সংক্ষেপে বিবরিত করিলেন। শুনিয়া মনােরমা চিন্তা করিতে লাগিলেন।
হেমচন্দ্র কহিলেন, “তােমার জিজ্ঞাস্য শেষ হইল। আমার কথার উত্তর দাও। কালি রাত্রে তুমি আমার সঙ্গ পরিত্যাগ করিয়া গেলে যাহা যাহা ঘটিয়াছিল সকল বল।”
মনােরমা মৃদু মৃদু, অস্ফূট স্বরে কি বলিলেন। গিরিজায়া তাহা শুনিতে পাইলেন না। বুঝিলেন চুপি চুপি কি কথা হইল।
গিরিজায় আর কোন কথা না শুনিতে পাইয়া গাত্রেত্থান