হেমচন্দ্র কহিলেন, “গিরিজায়ে, তোমাকে মিনতি করিতেছি গান রাখ, মৃণালিনীর সম্বাদ বল।”
গি। “কি বলিব?”
হে। “মৃণালিনীকে কেন দেখিয়া আইস নাই?”
গি। “গৌড়নগরে তিনি নাই।”
হে। “কেন? কোথায় গিয়াছেন?”
গি। “মথুরায়।”
হে। “মথুরায়? মথুরায়? কাহার সঙ্গে গেলেন? কি প্রকারে গেলেন? কেন গেলেন?”
গি। “তাঁহার পিতা কি প্রকারে সন্ধান পাইয়া লোক পাঠাইয়া লইয়া গিয়াছেন। বুঝি তাঁহার বিবাহ উপস্থিত। বুঝি বিবাহ দিতে লইয়া গিয়াছেন।”
হে। “কি? কি করিতে?”
গি। “মৃণালিনীর বিবাহ দিতে তাঁহার পিতা তাঁহাকে লইয়া গিয়াছেন।”
হেমচন্দ্র মুখ ফিরাইলেন। গিরিজায়া সে মুখ, সেই ভীম কান্তিযুক্ত মুখমণ্ডল দেখিতে পাইল না; আর যে হেমচন্দ্রের স্কন্ধস্থ ক্ষত মুখ ছুটিয়া বন্ধনবস্ত্র রক্তে প্লাবিত হইতেছিল তাহাও দেখিতে পাইল না। সে পূর্ব্বমত গায়িতে লাগিল।
“বিধি তোরে সাধি শুন, জন্ম যদি দিবে পুনঃ,
আমারে আবার যেন, রমণী জনম দিবে।
লাজভয় তেয়াগিব, এ সাধ মোর পুরাইব,
সাগর ছোঁচে রতন নিব, কণ্ঠে রাখ্বো নিশি দিবে।”
হেমচন্দ্র মুখ ফিরাইলেন। বলিলেন, “গিরিজায়ে, তোমার সম্বাদ শুভ। উত্তম হইয়াছে।”