পাতা:মৃণালিনী - বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়.pdf/১১৫

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
১১২
মৃণালিনী।

 হেমচন্দ্র কহিলেন, “তাঁহারা অদ্যই এস্থানে না আসিলে সকলই বিফল হইবে। যবনসেনা আসিয়াছে, মহাবনে অবস্থিতি করিতেছে। আজি কালি নগর আক্রমণ করিবে।”

 মাধবাচার্য্য শুনিয়া শিহরিয়া উঠিলেন। কহিলেন, “বঙ্গেশ্বরের পক্ষ হইতে কি উদ্যম হইয়াছে?”

 হে। “কিছুই না। বোধ হয় রাজসন্নিধানে এ সম্বাদ এ পর্যন্ত প্রচার হয় নাই। আমি দৈবাৎ কালি এ সম্বাদ প্রাপ্ত হইয়াছি।”

 মা। “এ বিষয় তুমি রাজগোচর করিয়া সৎপরামর্শ দাও নাই কেন?”

 হে। “সম্বাদ প্রাপ্তির পরেই পথিমধ্যে দ্স্যু কর্ত্তৃক আহত হইয়া রাজপথে পড়িয়াছিলাম। এইমাত্র গৃহে আসিয়া কিঞ্চিৎ বিশ্রাম করিতেছি। বলহানি প্রযুক্ত রাজসমক্ষে যাইতে পারি নাই। এখনই যাইতেছি।”

 মা। “তুমি এখন বিশ্রাম কর। আমি রাজার নিকট যাইতেছি। পশ্চাৎ যেরূপ হয় তোমাকে জানাইব।” এই। বলিয়া মাধবাচার্য্য গাত্রোথান করিলেন।

 তখন হেমচন্দ্র বলিলেন, “প্রভো! আপনি গৌড় পর্য্যন্ত গমন করিয়াছিলেন শুনিলাম—?

 মাধবাচার্য্য অভিপ্রায় বুঝিয়া কহিলেন, “গিয়াছিলাম। তুমি মৃণালিনীর সম্বাদ কামনা করিয়া জিজ্ঞাসা করিতেছ? মৃণালিনী তথায় নাই।”

 হে। “কোথায় গিয়াছে?”

 মা। “তাহা আমি অবগত নহি—কেহ সম্বাদ দিতে পারিল না।”

 হে। “কেন গিয়াছে?”